বরিশালের সরকারি ব্রজমোহন কলেজে স্বাস্থ্য খাতে সংস্কার দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে রবিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচ জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।
আহতরা হলেন মোহিউদ্দিন রনি, মোস্তাফিজুর রহমান, রাফি, সিফাত ও সুহান। তাদের মধ্যে পাঁচজন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোশিউল মুনির জানিয়েছেন, গুরুতর আহত কেউ জীবনহানির মধ্যে নেই।
দর্শক ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, সংঘর্ষটি মূলত বরিশালের নাথুল্লাবাদ এলাকায় দুই ছাত্রগোষ্ঠীর পূর্বের এক উত্তেজনার সূত্র ধরে বিস্ফোরিত হয়। সংঘর্ষের পেছনে সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে মনোমালিন্য এবং ধূমপান নিয়ে বিরোধের বিষয়টিও প্রভাব ফেলেছে।
সংঘর্ষের সময় মহিলা নেত্রীরাও উপস্থিত ছিলেন এবং সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ায়। সেনাবাহিনী নাথুল্লাবাদ এলাকায় ব্যাটন ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও উত্তেজনা কমেনি।
সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে রাখতে রবিবার রাতেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে একটি মধ্যস্থতা বৈঠক সরকারি ব্রজমোহন কলেজ ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হয়। কিন্তু ওই বৈঠক নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়।
আন্দোলনের প্রধান মোহিউদ্দিন রনি বলেছেন, “আমাদের ওপর পরিকল্পিত হামলা হয়েছে,” তবে তিনি নির্দিষ্ট কোনো গোষ্ঠীর নাম করেননি।
বরিশাল থেকে অ-বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সাব্বির হোসেন বলেছেন, “ঘটনা নাথুল্লাবাদ থেকে শুরু হয় এবং মূলত সিনিয়র-জুনিয়র বিরোধের কারণেই সংঘর্ষ বাঁধে।”
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, “ক্যাম্পাসে প্রশাসনিক অনুমতির অভাবে পুলিশ এখনো সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারেনি। হাসপাতাল ও ক্যাম্পাস এলাকায় তদন্ত চলছে।”
সরকারি ব্রজমোহন কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ড. শেখ তাজুল ইসলাম ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
ঘটনাটি স্বাস্থ্য খাতে সংস্কারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে চলমান আন্দোলনের একটি মর্মান্তিক দিক, যা সম্প্রতি নতুন মাত্রায় উত্তেজনা বৃদ্ধি করেছে।