আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীন শুক্রবার (৩০ মে) যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে যে তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রি চলমান থাকলে তা তাইওয়ান প্রণালীর উত্তেজনা তীব্র করবে। বেইজিংয়ে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যেন অবিলম্বে এই ধরনের অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করে এবং ‘ওয়ান চায়না’ নীতি ও তিনটি চীন-যুক্তরাষ্ট্র কমিউনিকের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের চেয়ে আরও বেশি অস্ত্র বিক্রি করা, যা প্রায় ১৮.৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি হতে পারে। এই অস্ত্র বিক্রি তাইওয়ানকে চীনের সামরিক চাপ থেকে রক্ষা করার জন্য বলে মনে করা হচ্ছে।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের অফিস জানিয়েছে যে দেশটি আত্মরক্ষা শক্তি বাড়াতে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এখনও এই নতুন অস্ত্র বিক্রির খবরের উপর মন্তব্য করেনি।
তাইওয়ানের সংসদ, যা বিরোধীদলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, এবছরের শুরুতে প্রতিরক্ষা বাজেট কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যা এই পরিকল্পনাকে প্রভাবিত করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র বিরোধীদলের ওপর চাপ দিচ্ছে যাতে তারা সরকারের প্রতিরক্ষা বাজেট বৃদ্ধির প্রচেষ্টার বিরোধিতা না করে।
চীন দীর্ঘদিন ধরে তাইওয়ানের ওপর সামরিক চাপ বাড়াচ্ছে এবং দ্বীপটির সার্বভৌমত্ব দাবি করছে। চীন বলছে দ্বীপটি চীনের অংশ এবং প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে পুনরায় সংযুক্তি ঘটাবে। কিন্তু তাইওয়ানের সরকার এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলে দ্বীপের ভবিষ্যত কেবল তাইওয়ানের জনগণের হাতে।
সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাইওয়ান মার্কিন থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কেনার পরিকল্পনা করছে, যার মধ্যে রয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র, গোলাবারুদ ও ড্রোন, যা তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
তবে চীন শুধু সামরিক চাপ নয়, মহাকাশে অস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনাকেও কড়া সমালোচনা করছে। চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রকে মহাকাশে অস্ত্র বর্ধনের জন্য ‘অস্ত্র প্রতিযোগিতা’ বাড়ানোর অভিযোগ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বহুমুখী উত্তেজনা এখন আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাইওয়ানের আশেপাশে সামরিক সংঘর্ষের আশঙ্কাও বেড়েই চলেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কেমন হবে তা সময়ই দেখাবে, তবে বর্তমান টানাপোড়েন সামরিক সংঘাতের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে আশঙ্কা রয়েছে।