ডেইলি প্রতিদিনের বাণী রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২৫, ১৫:১৬
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চারদিন ধরে চলা সংঘর্ষ দেখে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল বিশ্বজুড়ে। ৭ থেকে ১০ মে—এই চারদিন ছিল যেন ‘যুদ্ধের ট্রেলার’। তবে সামরিক বিশ্লেষক ও আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের মতে, ঘটনাটি যতটা না ভারত-পাকিস্তান কেন্দ্রিক, তার চেয়ে বেশি ছিল চীন-যুক্তরাষ্ট্রের ছায়াযুদ্ধ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ব্যবহৃত বেশিরভাগ অস্ত্রই ছিল চীনা নির্মিত। বেইজিংয়ের সহায়তায় মাত্র চারদিনেই পাকিস্তান ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আন্তর্জাতিক পরিসরে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছে।
বিশ্লেষক সদানন্দ ধুমে বলেন, “পাকিস্তান চীনের ঘনিষ্ঠ মিত্র, আর বেইজিং কখনোই তাদের মিত্রকে অপমানিত হতে দেখতে চায় না।” অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্র গত দুই দশকে ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্রে পরিণত হয়েছে। ফলে সংঘর্ষটি রূপ নেয় এক ধরনের প্রতীকী শক্তি-প্রদর্শনে।
নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞ ম্যাক্স আব্রাহামস বলেন, “কাশ্মীর এখন প্রক্সি যুদ্ধের নতুন ক্ষেত্র হতে পারে, যেখানে ভারতকে সমর্থন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, আর পাকিস্তানের পেছনে রয়েছে চীন।”
মিডল ইস্ট মিডিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সভাপতি ইগাল কারমন বলেন, “এই যুদ্ধ যদি বড় রূপ নেয়, তাহলে পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন হতে পারে এবং আফগানিস্তান, ইরান, এমনকি চীনও এর প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে পারবে না।”
বিশ্লেষকরা আরও জানান, পাকিস্তান পরিচালিত জে-১০ যুদ্ধবিমান ভারতের দুটি বিমান ভূপাতিত করেছে বলে দুই মার্কিন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। যদিও ভারত এই ঘটনার স্বীকৃতি দেয়নি।
আরও পড়ুন:
সিঙ্গাপুরভিত্তিক প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক আলেকজান্ডার নিল জানান, এই সংঘর্ষ চীনের জন্য হিমালয় সীমান্ত ঘেঁষে ভারতের সামরিক নীতির প্রকৃত অবস্থান পর্যবেক্ষণের এক দুর্লভ সুযোগ এনে দিয়েছে।
চীন ও ভারতের মধ্যকার দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ এবং আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা এমন এক অবস্থায় দাঁড়িয়েছে, যেখানে যেকোনো সংঘর্ষের পেছনে বৃহৎ পরাশক্তির ছায়া স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি এই ধরণের সংঘর্ষ আবারও ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে তা শুধু উপমহাদেশ নয়—সারাবিশ্বকেই একটি জটিল ভূরাজনৈতিক সংকটে ফেলবে।