প্রকাশিত: ২৫ মে ২০২৫, ৫:০৯ এএম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
চীনে কারাগার ব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছে নতুন এক প্রযুক্তিগত অধ্যায়। রোবট প্রহরী ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নজরদারি ব্যবস্থা এখন বাস্তবতা হয়ে উঠছে। একাধিক জেলে রোবট প্রহরীরা ইতোমধ্যেই নিয়োজিত, যাদের কাজ তাপমাত্রা পরিমাপ, অস্বাভাবিক আচরণ শনাক্ত ও নিয়মভঙ্গের বিষয়ে সতর্কবার্তা দেওয়া।
এই রোবটগুলো দেখতে সায়েন্স ফিকশন সিনেমার মতো না হলেও, এদের কার্যক্ষমতা যথেষ্ট আধুনিক। তারা ঘুমায় না, বিরতি নেয় না এবং নিয়ম মেনে কাজ করে। অর্থনৈতিক দিক থেকেও এগুলো দীর্ঘমেয়াদে সাশ্রয়ী হতে পারে।
কিন্তু শুধু সুবিধা নয়, এই প্রযুক্তি ঘিরে রয়েছে নানা বিতর্ক। মানবিক বিচারবোধের অভাব, সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকি ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের ভাবিয়ে তুলেছে। একজন রোবট হয়তো কণ্ঠস্বর চড়া হলে সতর্ক হতে পারে, কিন্তু বুঝতে পারে না তা বিতর্ক না কি সম্ভাব্য সংঘর্ষ।
চীনের কিছু কারাগারে বন্দিদের আচরণ মূল্যায়নে ‘স্মার্ট ইউনিফর্ম’ ও স্মার্ট স্কোরিং সিস্টেমও চালু হয়েছে। আচরণের ভিত্তিতে পয়েন্ট যুক্ত-বিয়োগ হয়, যা বন্দির সুযোগ-সুবিধা ও মুক্তির সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করে। এটি অনেকের মতে মানবিক বিচার ব্যবস্থাকে যান্ত্রিক করে তুলছে।
শুধু চীন নয়, দক্ষিণ কোরিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতেও রোবট প্রহরী ব্যবহারের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়া ২০১২ সালেই পরীক্ষামূলকভাবে রোবট প্রহরী ব্যবহার করে। সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থায় ধাপে ধাপে রোবট যুক্ত করছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পূর্ণাঙ্গ রোবট-নির্ভর কারা ব্যবস্থা এখনই সম্ভব নয়। তবে, রোবট ও মানুষের সম্মিলিত একটি ব্যবস্থা আগামী দিনের দৃষ্টান্ত হতে পারে। রোবট যেখানে রুটিন কাজ করবে, সেখানে মানব প্রহরীরা মনস্তাত্ত্বিক ও জটিল পরিস্থিতি সামলাবে।
কারা ব্যবস্থায় রোবটের উপস্থিতি নিঃসন্দেহে একটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, তবে এর মানবিক ও নৈতিক দিকগুলো নিয়ে সচেতন আলোচনা জরুরি। নিরাপত্তার পাশাপাশি মানবাধিকারও যেন সমানভাবে গুরুত্ব পায়, সেটাই হওয়া উচিত প্রযুক্তিনির্ভর ভবিষ্যতের প্রধান চ্যালেঞ্জ।