চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (CCP) এক বৃহৎ সামরিক শৃঙ্খলাভঙ্গ মোকাবিলা অভিযানের অংশ হিসেবে ৯ জন শীর্ষ জেনারেলকে দল এবং সামরিক বাহিনী থেকে বহিষ্কার করেছে।
চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। বহিষ্কৃতদের মধ্যে বেশিরভাগ তিন-তারকা জেনারেল এবং পার্টির সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সেন্ট্রাল কমিটির সদস্য ছিলেন। তারা সামরিক বাহিনী থেকেও বাদ পড়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “নির্দিষ্ট নিয়ম লঙ্ঘন এবং অত্যন্ত বড় আর্থিক সম্পর্কিত দায়িত্বহীনতা” এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের মূল ভিত্তি। তারা এখন সামরিক আদালতে বিচার প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হবেন।
বহিষ্কৃতদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন হে ওয়েইডং, যিনি সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের (CMC) ভাইস চেয়ারম্যান এবং চীনা সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা। তিনি Politburo-এর সদস্যও ছিলেন, যা তাকে প্রথম প্রাক্তন Politburo সদস্য হিসেবে তদন্তাধীন করেছে।
বিবেচ্য অন্যান্য কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছে:
মিয়াও হুয়া – CMC রাজনৈতিক কার্য বিভাগ পরিচালক
হে হংজুন – CMC রাজনৈতিক কার্য বিভাগ নির্বাহী উপ-পরিচালক
ওয়াং শিউবিন – CMC যৌথ অপারেশনস কমান্ড কেন্দ্র নির্বাহী উপ-পরিচালক
লিন শিয়াংইয়াং – ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডার
কিন শুতং – আর্মির রাজনৈতিক কমিশনার
ইউয়ান হুয়াজি – নেভির রাজনৈতিক কমিশনার
ওয়াং হৌবিন – রকেট ফোর্সেস কমান্ডার
ওয়াং চুনিং – আর্মড পুলিশ ফোর্স কমান্ডার
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ শুধু দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান নয়, রাজনৈতিক শুদ্ধিকরণের অংশ হিসেবেও দেখা যেতে পারে। এটি সেই সময়ে এসেছে যখন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা ও নতুন সদস্যদের ভোট গ্রহণের জন্য প্লেনামে বসতে যাচ্ছে।
চীনা বিশেষজ্ঞ নীল থমাস উল্লেখ করেছেন, “শিষ্টাচারের উপর কঠোর নজর এবং অচল বা অসৎ কর্মকর্তাদের পদক্ষেপটি পার্টির ‘স্ব-সংস্কার’ হিসেবে দেখা হয়, যা পার্টিকে দীর্ঘমেয়াদি শাসনের জন্য দক্ষ ও শৃঙ্খলাবদ্ধ রাখে। তবে এতে প্রশাসনে সৃজনশীলতা হ্রাস পেতে পারে এবং ব্যবস্থাপনা কঠোর ও সংবেদনশীল হয়ে ওঠে।”
চলতি বছরের ২০ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া চতুর্থ প্লেনামে এই বহিষ্কৃতদের উপস্থিতি বিষয়টি নজরকাড়া হবে, যা পরবর্তী রাজনৈতিক দৃশ্যমান সংকেত হিসেবে গণ্য করা হবে।