Tuesday, July 22, 2025
Homeঅর্থ-বাণিজ্যচরম সংকটে ২০ আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বন্ধের পথে প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

চরম সংকটে ২০ আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বন্ধের পথে প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

লাভজনক কার্যক্রম না থাকায় ২২ হাজার কোটি টাকার আমানত ঝুঁকিতে, অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের পরিকল্পনা

দেশের আর্থিক খাতে বড় ধরনের সংস্কারের অংশ হিসেবে ২০টি বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব প্রতিষ্ঠান বর্তমানে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে এবং এদের অধিকাংশের খেলাপি ঋণের হার ৯০ শতাংশেরও বেশি বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বন্ধের প্রক্রিয়ায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: সিভিসি ফাইন্যান্স, বে লিজিং, ইসলামিক ফাইন্যান্স, মেরিডিয়ান ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, হজ ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ফাইন্যান্স, আইআইডিএফসি, প্রিমিয়ার লিজিং, প্রাইম ফাইন্যান্স, উত্তরা ফাইন্যান্স, অ্যাভিভা ফাইন্যান্স, ফিনিক্স ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, বিএইএফসি, ফারইস্ট ফাইন্যান্স ও ফাস ফাইন্যান্স।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠানে মোট ২২ হাজার ১২৭ কোটি টাকার আমানত রয়েছে। এর মধ্যে ৭৪ শতাংশ ইনস্টিটিউশনাল ফান্ড, আর ২৬ শতাংশ এসেছে ব্যক্তি আমানতকারীদের কাছ থেকে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যেই এসব প্রতিষ্ঠানে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে, যাতে জানতে চাওয়া হয়েছে তাদের লাইসেন্স বাতিল না করার যৌক্তিকতা। সন্তোষজনক জবাব না পেলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে চূড়ান্তভাবে বন্ধের প্রক্রিয়ায় নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, “বিনিয়োগকারী ও আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা এবং আর্থিক খাতকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে অর্থ ঋণ জালিয়াতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। অনিয়মে জড়িত ব্যক্তি ও পরিচালকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে ব্যাংক খাতে আস্থা ফিরিয়ে আনতে চায় কর্তৃপক্ষ। তবে এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের আমানতের নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, পুরো প্রক্রিয়া দীর্ঘ হতে পারে, তবে এর মাধ্যমে দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্মূল করে একটি স্থিতিশীল ও স্বচ্ছ অর্থনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

RELATED NEWS

Latest News