Sunday, June 22, 2025
Homeবিনোদনট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘নো কিংস’ বিক্ষোভে তারকাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘নো কিংস’ বিক্ষোভে তারকাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ

মার্ক রাফালো, কেরি ওয়াশিংটন, জুলিয়া লুইস-ড্রাইফাসসহ বহু তারকার প্রতিবাদ ট্রাম্পের একনায়কসুলভ আচরণের বিরুদ্ধে

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে “নো কিংস” নামে একটি দেশব্যাপী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন বহু তারকা ও সাধারণ মানুষ। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘একনায়কসুলভ আচরণ’ ও কঠোর অভিবাসন নীতির প্রতিবাদে এই আন্দোলন শুরু হয়েছে।

নিউইয়র্ক থেকে শুরু করে লস অ্যাঞ্জেলেস ও অস্টিন পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন। লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে যখন অনুমোদন না নিয়েই ট্রাম্প প্রশাসন সেখানে ২০০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য ও ৭০০ মেরিন সেনা মোতায়েন করে।

রাস্তায় নেমেছেন হলিউড তারকারা

নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভে অংশ নিয়ে অভিনেতা মার্ক রাফালো বলেন, “আমাদের গণতন্ত্র আজ বড় বিপদের মুখে। ট্রাম্প নিজেকে একনায়ক বানানোর চেষ্টা করছেন। আমরা প্রতিদিনই সংবিধান লঙ্ঘনের সাক্ষী হচ্ছি।”

তিনি বলেন, “আমরা এমন এক রাষ্ট্রে বাস করছি, যেখানে অভিবাসীদের জোরপূর্বক অপহরণ করা হচ্ছে। এমনকি যাদের বৈধ কাগজপত্র আছে, তাদেরও সন্তানদের আলাদা করে দেওয়া হচ্ছে। এটি সহ্য করা যায় না।”

রাফালো আরও বলেন, “আমাদের সংবিধান আজ অপমানিত। সেনাবাহিনী ব্যবহার করে জনগণের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। এটি আমেরিকার ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।”

কেরি ও জুলিয়ার প্রতিবাদ ব্যানারে ব্যঙ্গাত্মক বার্তা

সান্তা মনিকায় আয়োজিত আরেকটি বিক্ষোভে অভিনেত্রী কেরি ওয়াশিংটন ও জুলিয়া লুইস-ড্রাইফাস হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে অংশ নেন, যেখানে লেখা ছিল “আমার পছন্দের একমাত্র রাজা হলো প্রজাপতি।”

এছাড়া অন্য প্ল্যাকার্ডে দেখা যায়, “আইস হোক আমার পানীয়তে, রাস্তায় নয়।”

গ্লেন ক্লোজের ক্ষোভ

অভিনেত্রী গ্লেন ক্লোজ মন্টানার বোজম্যান শহরে ৩ হাজার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে অংশ নেন। ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “আমি ব্যথিত, ক্ষুব্ধ এবং বিচলিত। যখন মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছে, তখনই দুটি রাজনীতিককে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ হয়েছে। এর পেছনে ষড়যন্ত্র স্পষ্ট।”

তিনি বলেন, “এটি স্লোগান নয়, এটি মিলিয়ন মানুষের সম্মিলিত উপস্থিতি, যারা চায় না এই দেশ কোনো স্বেচ্ছাচারীর হাতে বিক্রি হয়ে যাক।”

কণ্ঠে প্রতিবাদ, হৃদয়ে ভালোবাসা

অভিনেত্রী ম্যারিসা টোমেই ও ড্যান বুকাটিনস্কিও যোগ দেন এই বিক্ষোভে। তাদের হাতে ছিল “এটাই গণতন্ত্রের রূপ” লেখা ব্যানার।

অভিনেত্রী আইও এডেবিরি ও প্যাটি হ্যারিসন একসঙ্গে অংশ নিয়ে “ভয় পেও না, আমরা পাশে আছি” লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

জিমি কিমেলের আবেগঘন বার্তা

টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব জিমি কিমেল দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় তার পরিবারসহ অংশ নেন। ইনস্টাগ্রামে তিনি লেখেন, “মানুষ এখনো বিশ্বাস করে, এই দেশ ভালো কিছুর প্রতীক হতে পারে। আমি গর্বিত যে এতজন আমেরিকান প্রতিবাদে অংশ নিয়েছে।”

তিনি যোগ করেন, “আমার পরিবার আমাকে শিখিয়েছে, ‘একে অন্যকে ভালোবাসো’ – এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা।”

একাধিক শহরে একক লক্ষ্য

লস অ্যাঞ্জেলেসের বিক্ষোভে অভিনেত্রী মেরি এলিজাবেথ এলিস অংশ নেন। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, “ফ্যাসিবাদের স্থান নেই আমেরিকায়” ও “আমার শহর পরিপাটি চাই, আইস নয়।”

ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেছেন, “এই রাস্তা আমাদের। আমরা মুখ বন্ধ করে থাকব না।”

সংবিধান রক্ষায় একত্র জনগণ

এই বিক্ষোভগুলো মূলত যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র রক্ষা, মানবাধিকার সংরক্ষণ এবং অভিবাসীদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের জন্য আয়োজিত হয়েছে। তারকারা এতে যোগ দিয়ে শুধু সমর্থনই জানাননি, বরং জনগণের কণ্ঠকেও উজ্জীবিত করেছেন।

নো কিংস আন্দোলন এখনো চলছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের নাগরিক অংশগ্রহণ আগামী নির্বাচনী রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

RELATED NEWS

Latest News