পদ্মা সেতুতে চালু হয়েছে দেশের প্রথম নগদবিহীন ও সংগ্রাহকবিহীন “ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ETC)” ব্যবস্থা। এই ডিজিটাল টোল সিস্টেমের মাধ্যমে এখন গাড়িগুলো থেমে না থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেতু পার হতে পারবে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই আধুনিক ব্যবস্থা চালু করা হয়। সেতু বিভাগের সচিব বলেন, প্রযুক্তিনির্ভর এই উদ্যোগ বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তর যাত্রায় একটি বড় মাইলফলক, যা টোল আদায় প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত, স্বচ্ছ ও কার্যকর করবে।
বর্তমানে বিকাশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের ‘ট্যাপ’ অ্যাপ এবং মিডল্যান্ড ব্যাংকের মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর টোল পরিশোধ করা যাচ্ছে।
গাড়ির মালিকরা বিকাশ অ্যাপের “Toll” অপশনে গিয়ে “Register Motor Vehicle” নির্বাচন করে গাড়ির নম্বর ও চেসিস নম্বরের শেষ চারটি সংখ্যা দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারবেন। নিবন্ধনের পর একটি “Ekpass ID” এসএমএসের মাধ্যমে পাঠানো হয়।
এই ইকপাস আইডি ব্যবহার করে “Pay Bill” অপশনের “D-Toll Top-Up” সেবার মাধ্যমে অ্যাকাউন্টে টাকা রিচার্জ করা যায়। প্রথমবার সেতু পার হওয়ার আগে মাওয়া টোল প্লাজার নিবন্ধন বুথে বিআরটিএ অনুমোদিত আরএফআইডি ট্যাগ যাচাই করতে হয়।
নিবন্ধন সম্পন্ন হলে যানবাহন ETC লেন দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার গতিতে থেমে না থেকে সেতু পার হতে পারে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ট্রাস্ট ব্যাংকের ‘ট্যাপ’ অ্যাপের মাধ্যমে এই সিস্টেমের পাইলট কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে সেবার পরিসর বাড়ছে। এখন পর্যন্ত মোট ১,৮১৪টি যানবাহন এই সিস্টেম ব্যবহার করেছে, যার মাধ্যমে প্রায় ৩৪ লাখ ৯১ হাজার ৭০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফওজুল কবির খানের বিশেষ নির্দেশনায় এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ডিজিটাল টোল ব্যবস্থা টোল আদায়ের সময়, জ্বালানি ও মানবসম্পদের অপচয় কমাতে বড় ভূমিকা রাখবে। আগামী মাসগুলোতে আরও ব্যাংক ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসকে এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
আইসিটি বিভাগের আওতাধীন a2i প্রোগ্রাম বর্তমানে অতিরিক্ত আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানকে সংযুক্ত করার সমন্বয় করছে।
এই নগদবিহীন, স্বয়ংক্রিয় টোল ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ব্যবহারকারীরা এখন আরও দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছভাবে টোল পরিশোধ করতে পারবেন— যা স্মার্ট ও ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।