৩৫ বছর বয়সী রায়ান মেন্দেস হয়তো তুরস্কের দ্বিতীয় বিভাগীয় ক্লাব ইগদিরের বাইরেও খুব একটা পরিচিত নাম নন, কিন্তু আগামী গ্রীষ্মে ফুটবল বিশ্ব জানবে তার নাম।
কারণ, তার নেতৃত্বেই কেপ ভার্দে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে। গত সপ্তাহে এসওয়াতিনির বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে ইতিহাস গড়ে এই ছোট আফ্রিকান দেশটি।
এটা কোনো কাকতালীয় সাফল্য নয়। পর্তুগালের উপনিবেশিক অতীতের কারণে কেপ ভার্দের দলে ইউরোপে খেলা প্রতিভাবান ফুটবলারদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
সাম্প্রতিক আফ্রিকা কাপ অব নেশন্সে তারা ঘানাসহ শক্তিশালী দলগুলোর গ্রুপে শীর্ষে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছিল এবং টাইব্রেকারে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে বিদায় নেয়।
২০২৬ সালের বিশ্বকাপ বাছাইয়েও তারা আবার ক্যামেরুনকে পেছনে ফেলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
কেপ ভার্দের অধিনায়ক মেন্দেস বলেন, “আমরা চারটি আফ্রিকান কাপ অব নেশন্স খেলেছি এবং ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের কাছাকাছিও গিয়েছিলাম। বছরের পর বছর পরিশ্রমের ফল এটা। আজ বলতে পারি—এটা যৌক্তিক পরিণতি।”
তবু বাস্তববাদী এই বক্তব্যের আড়ালেও রয়েছে অবিশ্বাস্য আনন্দের ছোঁয়া। জয় নিশ্চিত হওয়ার পর রাজধানী প্রাইয়ার রাস্তায় উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়।
“সত্যি বলতে, এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না,” বলেন মেন্দেস, যিনি খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেছিলেন ফ্রান্সের লে হাভর ও লিল-এ, পরে ইংল্যান্ডের নটিংহ্যাম ফরেস্টেও খেলেছেন।
“ছোটবেলায় আমি রোনালদোর ব্রাজিলকে দেখে বড় হয়েছি। স্বপ্ন দেখতাম একদিন বিশ্বকাপে খেলার। কিন্তু যা আমরা সোমবার ঘরে বসে দেখেছি, এমন কিছু আগে কখনো ঘটেনি। পুরো জাতি আনন্দে ভাসছে—দেশে, প্রবাসে সবাই উদযাপন করছে। এটা ভেবে এখনো শরীরে কাঁটা দেয়।”
প্রায় ৫ লাখ ২৫ হাজার জনসংখ্যার এই ছোট দ্বীপরাষ্ট্র হবে বিশ্বকাপে খেলা দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ (জনসংখ্যার হিসেবে)—আইসল্যান্ডের পর। ভূখণ্ডের দিক থেকেও এটি সবচেয়ে ছোট অংশগ্রহণকারী দেশ।
তাদের দলে বিশ্বমানের তারকা না থাকলেও, মেন্দেস বিশ্বাস করেন কেপ ভার্দে নিজেদের ছাপ রাখবে।
“একটা কথা নিশ্চিত—আমরা শুধু তিনটা ম্যাচ খেলে ফিরে আসার জন্য যাচ্ছি না,” তিনি বলেন।
“আমরা ভালো ফুটবল খেলতে চাই, সুন্দর কিছু স্মৃতি তৈরি করতে চাই। আমরা আমাদের গল্পটা নিজেরাই লিখব। আশা করি এই গল্পটা আমাদের যোগ্যতার চেয়েও সুন্দর হবে।”