চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জন্ম নেওয়া ৩৩টি বার্মিজ অজগর সাপ আজ সকালে (৪ জুলাই) ফটিকছড়ির হাজরীখীল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে অবমুক্ত করা হয়েছে। বন বিভাগ ও চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়, যা জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
অবমুক্তি কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন ফটিকছড়ি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নজরুল ইসলাম, হাজরীখীল রেঞ্জ কর্মকর্তা শিকদার আতীকুর রহমান এবং চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার উপ-তত্ত্বাবধায়ক ডা. শহীদাত হোসেন শুভ।
ডা. শুভ বলেন, “প্রাকৃতিক খাদ্য শৃঙ্খল রক্ষায় এই অজগর সাপগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। দীর্ঘদিন পর্যবেক্ষণ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, তারা প্রাকৃতিক পরিবেশে টিকে থাকতে সক্ষম।”
তিনি আরও জানান, হাজরীখীল বনাঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্যের কারণে এ জায়গাটি বারবার অবমুক্তির জন্য বেছে নেওয়া হচ্ছে। এটি রেপ্টাইল ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবেও পরিচিত।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা ২০১৯ সাল থেকে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বার্মিজ অজগরের বংশবৃদ্ধি কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এবারের ৩৩টি সাপের জন্ম হয় ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে সংগৃহীত দুটি প্যাথনের মোট ৪৫টি ডিম থেকে। ১১-১৩ জুন প্রথম দফায় ১৭টি এবং ২১-২৪ জুন দ্বিতীয় দফায় ১৬টি বাচ্চা ফুটে বের হয়।
এই নিয়ে মোট ছয়বার সফলভাবে বার্মিজ অজগরের কৃত্রিম প্রজনন হলো চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায়। সর্বমোট ১৪৮টি সাপ জন্ম নিয়েছে, যার মধ্যে ৮০টি ইতোমধ্যেই চারটি ধাপে বনাঞ্চলে অবমুক্ত করা হয়েছে।
হাজরীখীল রেঞ্জ কর্মকর্তা শিকদার আতীকুর রহমান বলেন, “এই অবমুক্তি শুধু অজগরের জন্যই নয়, পুরো বনজ পরিবেশের জন্যই ইতিবাচক। আমরা আশা করি, এই ধরণের উদ্যোগ পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী উভয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।”
পরিবেশবিদরাও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, এ ধরনের প্রকল্পগুলো দেশব্যাপী সম্প্রসারিত হলে পরিবেশ রক্ষা ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বড় অবদান রাখবে।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা জানিয়েছে, ভবিষ্যতেও এই ধরনের উদ্যোগের পরিধি আরও বাড়ানো হবে এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে কাজ করা হবে।