বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, জাতীয় সংসদে নারী সংরক্ষিত আসন ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার প্রস্তাবে দলটি সমর্থন জানিয়েছে। একই সঙ্গে, সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়েও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অনুপাতে সদস্য অন্তর্ভুক্তির পক্ষে বিএনপি অবস্থান নিয়েছে।
সোমবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার ১৩তম দিনের শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, “বর্তমান বাস্তবতায় সরাসরি ৩৩ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া কঠিন। তাই নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়ার নীতিতে বিএনপি বিশ্বাস করে।”
তিনি আরও বলেন, “রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার (আরপিও) অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলোর কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী অংশগ্রহণ থাকার কথা থাকলেও, সেটিও এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে সংসদে সরাসরি ৩৩ শতাংশ নারী মনোনয়ন বাস্তবিকভাবে কঠিন।”
তিনি দলটির নারীবান্ধব অবস্থানের ইতিহাস তুলে ধরেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং নারী সংরক্ষিত আসন ১৬ থেকে ৩০-এ উন্নীত করেন। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সেটি বাড়িয়ে ৪৫ করেন এবং বর্তমানে তা ৫০-এ দাঁড়িয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, “এই সংখ্যা ভবিষ্যতে আরও বাড়ানো যেতে পারে।”
সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব নিয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা এমন একটি উচ্চকক্ষ চাই যেখানে রাষ্ট্র এবং সমাজে অবদান রাখা ব্যক্তিদের স্থান দেওয়া হবে। তবে এর গঠন হতে হবে নিম্নকক্ষের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অনুপাত অনুসারে।”
তিনি সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে ৬৪ জেলা ও ১২টি মহানগরী থেকে ৭৬ সদস্যের উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাবকে ‘অস্বাভাবিক’ হিসেবে আখ্যা দেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, “এ ধরনের প্রস্তাব বাস্তবতা বিবর্জিত। প্রতিনিধিত্বভিত্তিক কাঠামোই গ্রহণযোগ্য ও যুক্তিসঙ্গত হবে।”
এই আলোচনায় বিএনপির পক্ষ থেকে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং সাংবিধানিক কাঠামোর সংস্কারে দলের নীতিগত অবস্থান পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।