Thursday, June 26, 2025
Homeরাজনীতিপ্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছরে সীমিত করার প্রস্তাবে বিএনপির সমর্থন, আপত্তি নিয়োগ কমিটি...

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছরে সীমিত করার প্রস্তাবে বিএনপির সমর্থন, আপত্তি নিয়োগ কমিটি নিয়ে

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় সময়সীমা বিষয়ে ঐক্য, তবে নিয়োগ কমিটিতে মতানৈক্য রয়ে গেছে

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সর্বোচ্চ ১০ বছরে সীমাবদ্ধ করার প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি। তবে তারা ‘নিয়োগ কমিটি’র প্রস্তাবিত কাঠামো নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে।

বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার আলোচনার ষষ্ঠ দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষ থেকে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন নেতা সালাহউদ্দিন।

তিনি বলেন, “কেউ যেন আজীবন প্রধানমন্ত্রী না থাকেন, আমরা তা চাই। কিন্তু নিয়োগ কমিটির মাধ্যমে নির্বাহী ক্ষমতার সর্বত্র হস্তক্ষেপের সুযোগ থাকলে, সেটি আমরা সমর্থন করতে পারি না।”

কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রিয়াজ জানান, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদসীমা নিয়ে আলোচনা হলেও এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে নিয়োগ কমিটির কাঠামো ও কর্তৃত্ব সম্পর্কিত বিষয়ও জড়িত।

নিয়োগ কমিটি নিয়ে কমিশনের সংশোধিত প্রস্তাবে বলা হয়, এটি হবে সাত সদস্যের। সদস্য হিসেবে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, দুই কক্ষের স্পিকার, রাষ্ট্রপতির মনোনীত একজন প্রতিনিধি, প্রধান বিচারপতির মনোনীত একজন বিচারপতি এবং প্রধান বিরোধী দল ছাড়া অন্য বিরোধী পক্ষের একজন প্রতিনিধি।

এই কমিটির বৈঠক পরিচালনা করবেন নিম্নকক্ষের স্পিকার।

আলী রিয়াজ জানান, নাম, সদস্য সংখ্যা ও কর্তৃত্বে তিনটি পরিবর্তন এনে নতুন প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে। বেশিরভাগ দল তা সমর্থন করলেও কিছু দল আপত্তি জানিয়েছে। পরবর্তী সপ্তাহে সংশোধিত সুপারিশ সকল দলের কাছে পেশ করা হবে।

বিএনপি এই নিয়োগ কাঠামো পরিবর্তনের প্রস্তাবে সমর্থন না জানিয়ে বিকল্প হিসেবে আইনি সংস্কারের কথা বলেছে। সালাহউদ্দিন বলেন, “যেসব সংস্থার জন্য আইন নেই, নতুন আইন করতে হবে। যেগুলোর আছে, সেখানে সংশোধন আনতে হবে। এতে নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপ রোধ করা যাবে।”

জামায়াতের নায়েবে আমির সাঈদ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, “বিএনপি বাদে সকল দল এই নিয়োগ কাঠামোতে সম্মত হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে।”

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান মঞ্জু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যদি এই প্রস্তাব গৃহীত না হয়, তাহলে কিছুই অর্জিত হবে না।”

অন্যদিকে, কমিশন প্রস্তাবিত মৌলিক নীতিমালার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এনেছে। প্রাথমিকভাবে ‘সমতা, মানব মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্র’ প্রস্তাব করা হলেও পরে ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্প্রীতি ও নিরপেক্ষতা’ যুক্ত করা হয়েছে।

আলী রিয়াজ বলেন, এই প্রস্তাবের ওপর এখনো সর্বসম্মত মত পাওয়া যায়নি। তবে অধিকাংশ দল পাঁচটি উপাদান অন্তর্ভুক্তির পক্ষে মত দিয়েছে। আগামী সপ্তাহে বিস্তারিত প্রস্তাবনা পেশ করা হবে।

সালাহউদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, তাদের দল সংবিধানের ৫ম সংশোধনী পুনরুদ্ধার ও সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত বাক্য অন্তর্ভুক্তির কথা বলেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় এখনো অনেক বিষয়ে পূর্ণ ঐক্যমত্য হয়নি। তবে বিভিন্ন প্রস্তাবের পেছনে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

  • বিষয়াদি সম্পর্কে আরও পড়ুন:
  • বিএনপি

RELATED NEWS

Latest News