নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণার পর থেকেই দেশের রাজনীতিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে আয়োজনের ঘোষণা দেন। এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এই সময়সীমাকে জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মন্তব্য করেন। তবে এ বিষয়ে দলীয়ভাবে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি এখনো দেয়া হয়নি। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিষয়টি দলের ফোরামে আলোচিত হবে, এরপর আনুষ্ঠানিক অবস্থান জানানো হবে।
প্রসঙ্গত, এতদিন পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টা বলছিলেন নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে হবে। শুক্রবার তিনি নির্দিষ্ট করে বলেন, নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথম ভাগে অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন, রাষ্ট্র সংস্কারে দৃশ্যমান অগ্রগতি: অধ্যাপক ইউনূস
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, এই সময়সীমা দেশের অধিকাংশ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ৫০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা চাইলে তা জানুয়ারির মধ্যেও আয়োজন করা যেত।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালনা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ব্যাখ্যাও গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল, বিশেষ করে বিদেশি কোম্পানি নিয়োগের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনকাল ঘোষণা: জামায়াতসহ চারটি দলের স্বাগত
এদিকে, বিএনপির নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রশ্ন তোলেন, কোনো বিশেষ মহলের প্রভাব কি প্রধান উপদেষ্টার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পেছনে কাজ করেছে? তিনি বলেন, যদি এমন হয়ে থাকে, তাহলে আগামী নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও আরও প্রশ্ন উঠবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণা রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের স্বচ্ছতা আনলেও, বিরোধী দলগুলোর অসন্তোষ নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এখন অপেক্ষা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ এবং বোঝাপড়ার কী ধরনের অগ্রগতি ঘটে, সেটির দিকে।