Friday, June 27, 2025
Homeরাজনীতিপ্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছরে সীমাবদ্ধ করার প্রস্তাব দিল বিএনপি

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছরে সীমাবদ্ধ করার প্রস্তাব দিল বিএনপি

গণতন্ত্র রক্ষায় বিচার বিভাগ, সংসদ ও নির্বাহী বিভাগে ভারসাম্য চায় দলটি

বিএনপি স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদ ১০ বছরে সীমাবদ্ধ করলে দেশে স্বৈরশাসন ও ফ্যাসিবাদের উত্থান রোধ করা সম্ভব হবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাগরিক ঐক্যের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, “অনেকেই সংস্কার নিয়ে কথা বলেছেন। তবে কেউ হতাশা প্রকাশ করেননি। কারণ আমরা আশাবাদী যে ইতিবাচক ফলাফল আসবে।”

তিনি জানান, জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো নিয়ে আলোচনা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। তবে তিনি বিশ্বাস করেন, এক পর্যায়ে সব দল একমত হবে।

বিএনপি নেতার ভাষায়, “আমরা বলেছি, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন। এর ফলে স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদের পথ রুদ্ধ করা সম্ভব হয়েছে। এটি আমাদের বড় অর্জন।”

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে হবে, যাতে গণতন্ত্র সুরক্ষিত থাকে।

নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, “একটি সঠিকভাবে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন যদি নির্বাচন পরিচালনা করে, তবে স্বৈরশাসনের উত্থান ঠেকানো সম্ভব হবে।”

তিনি জানান, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও গণতন্ত্র রক্ষার অপরিহার্য অংশ। “যে দেশে ১০০ শতাংশ মিডিয়া স্বাধীন, সে দেশে ১০০ শতাংশ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত।”

বিএনপি নেতা বলেন, রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ— নির্বাহী, বিচার বিভাগ ও আইন প্রণয়ন বিভাগ—কে তাদের নিজ নিজ সাংবিধানিক ও আইনগত সীমার মধ্যে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।

তিনি বলেন, “একটি অঙ্গ আরেকটির ওপর কর্তৃত্ব করতে পারবে না। বরং ভারসাম্য রক্ষা করেই তারা একে অপরের সুরক্ষার ভূমিকা পালন করবে।”

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সর্বোচ্চ মেয়াদ ১০ বছর নির্ধারণে অধিকাংশ দলের সমর্থন: সাকি

তিনি বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “বিচার বিভাগ স্বাধীন হলে তা গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হবে। পাশাপাশি মিডিয়ার স্বাধীনতা ও নির্বাচনের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে।”

সালাহউদ্দিন বলেন, সব রাজনৈতিক দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারে একমত হওয়ায় সেটি ইতোমধ্যে পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেয়েছে।

তিনি জানান, ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদে সংস্কার এনে দলীয় সিদ্ধান্তে এমপিদের স্বাধীন ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও গোপন ব্যালটের মাধ্যমে উভয়পক্ষের এমপিরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন বলে বিএনপির প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে।

সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা এমন সংস্কার চাই না যা রাষ্ট্রের কোনো একটি অঙ্গকে দুর্বল করবে। বরং এমন সংস্কার চাই যা রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে শক্তিশালী করবে এবং দেশের মানুষ অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে পারবে।”

তিনি আরও বলেন, “যেহেতু একসময় সংসদীয় পদ্ধতিতেও স্বৈরতন্ত্র এসেছে, তাই শুধু নির্বাহী বিভাগকে দুর্বল করেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। বরং সব অঙ্গের মাঝে ভারসাম্য, সহযোগিতা ও সংবেদনশীল সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।”

RELATED NEWS

Latest News