১১ বছরের দ্বন্দ্ব ও বিভেদের অবসান ঘটিয়ে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার ঘোষিত নতুন কমিটির মাধ্যমে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ঐক্য প্রতিষ্ঠা পেল।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণকে আহ্বায়ক ও হাফেজ আজিজুল হককে সদস্যসচিব করে ১০১ সদস্যের উপজেলা বিএনপির কমিটি অনুমোদন করেছে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপি। একই দিনে পৌর বিএনপির ৯৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়, যেখানে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আলী আকবর আনিস ও সদস্যসচিব হিসেবে সুজিত কুমার দাস।
উপজেলা কমিটিতে ২৫ জন যুগ্ম আহ্বায়ক ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছেন হাবিবুল ইসলাম খান শহীদ, অ্যাডভোকেট আব্দুস সোবহান সুলতান, আব্দুর রহমান বাবুল, অ্যাডভোকেট মো. নুরুল হকসহ বহু প্রবীণ ও নবীন নেতাকর্মী। অপরদিকে পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কদের তালিকায় রয়েছেন রমজান হোসেন খান জুয়েল, মনিরুজ্জামান পলাশ, আফরোজা আক্তার সোমা, ইঞ্জিনিয়ার শাহজাহানসহ মোট ২৪ জন।
ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার বলেন, “দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতেই সব পক্ষকে একত্র করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখন সকল বিভেদ ভুলে একযোগে কাজ করা হবে।”
স্থানীয় নেতারা জানান, সর্বশেষ একক উপজেলা ও পৌর কমিটি গঠিত হয়েছিল ২০০৯ সালে। এরপর ২০১৪ সালে নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও জেলা নেতাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে গৌরীপুরে দুটি পৃথক উপজেলা কমিটি গঠিত হয়। একই সময় পৌর বিএনপির কমিটি ঘোষণার পর এক বিতর্কিত নেতাকে আহ্বায়ক করায় কেন্দ্রীয় বিএনপি সেটি স্থগিত করে। ফলে দীর্ঘ সময় ধরেই পৌর বিএনপি কার্যত নেতৃত্বশূন্য ছিল।
২০২২ সালের ২২ অক্টোবর গৌরীপুর সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে উপজেলা ও পৌর বিএনপির পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর প্রায় ২ বছর ৬ মাস ২১ দিন সংগঠনিকভাবে নেতৃত্বশূন্য ছিল গৌরীপুর বিএনপি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন নেতৃত্ব দলকে মাঠ পর্যায়ে পুনরায় সুসংগঠিত করতে পারবে যদি অভ্যন্তরীণ ঐক্য ধরে রাখা যায়। এখন দেখার বিষয়, দীর্ঘদিনের বিভেদ কাটিয়ে নতুন কমিটি গৌরীপুরে কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।