বিএনপির শীর্ষ নেতারা বৃহস্পতিবার সময়মতো ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন, নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র কাটিয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষা, সংস্কার অব্যাহত রাখা ও অর্থনীতিকে সচল রাখতে এটি অপরিহার্য।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, কিছু রাজনৈতিক দল আসন্ন নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, “আমি কাউকে দোষ দিতে চাই না। কিন্তু হতাশার সঙ্গে লক্ষ্য করছি—কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চায়। এটি ঠিক নয়।”
তিনি আরও বলেন, “এখন প্রয়োজন একটি রাজনৈতিক সরকার, কারণ দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি ও শিক্ষা—সবকিছুই আগামী দিনের নির্বাচিত সরকারের ওপর নির্ভর করছে।”
ফখরুল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি)-তে এক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কার এজেন্ডার প্রশংসা করে বলেন, “এটি দেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি ছিল।”
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) প্রশাসন থেকে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের দূরে রাখতে হবে যাতে আসন্ন নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য ও নিরপেক্ষ হয়।
বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন,
“গত ১৫ বছরে প্রশাসন একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের অনুগত হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এর ফলে জনগণ তিনটি ভুয়া নির্বাচনে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “যারা অতীতে ভয় বা চাপে অন্যায় করেছে, তাদের এখন গণতান্ত্রিক পরিবেশে দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত করতে হবে।”
মঈন খান নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য দলীয় নয়, জাতীয় স্বার্থে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা।”
আরো পড়ুন | ফটিকছড়িতে বিএনপি নেতা কাজী গনি চৌধুরীর আহ্বান: ‘ধানের শীষে ভোট দিন মানবিক বাংলাদেশ গড়তে’
মঈন খান জানান, দেশে প্রায় ১০ লাখ প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পুলিশ ও বিচারকর্মী নির্বাচন পরিচালনায় যুক্ত থাকবেন। এটি হবে ৩ লাখ বুথ ও ৪২ হাজার কেন্দ্র জুড়ে অনুষ্ঠিত একটি বিশাল আয়োজন।
তার প্রশ্ন, “এত বড় কাঠামো কি কমিশনের নিয়ন্ত্রণে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবে?”
অন্যদিকে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ শক্তি হিসেবে গড়ে ওঠে, তবেই জাতি প্রকৃত স্বস্তি পাবে।”
তিনি এ মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক সেমিনারে, যার শিরোনাম ছিল “২০২৪ সালের বাংলাদেশে তরুণদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থান ভাবনা”।
কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে সালাহউদ্দিন বলেন, একটি রাজনৈতিক দল জুলাই জাতীয় চার্টারে স্বাক্ষরের সুযোগ খুঁজছে, এবং আশা প্রকাশ করেন যে তারা শিগগিরই তা করবে।
