আসন্ন ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বুধবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এই বাজেটে নতুন চিন্তার কোনো ছাপ নেই। এটি একতরফা ও প্রচলিত কাঠামোয় তৈরি।”
তিনি বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক রূপরেখা তৈরি করবে। কিন্তু সেই সুযোগ নষ্ট করা হয়েছে।”
সোমবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জাতীয় সম্প্রচারে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেন। এর প্রেক্ষিতে বিএনপি তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: বাজেট বাস্তবতা থেকে দূরে, ক্ষোভ জানাল জাতীয় নাগরিক পার্টি
বাজেট নিয়ে সমালোচনার পাশাপাশি বিএনপি ক্ষমতায় এলে কোন খাতে অগ্রাধিকার দেবে, তার একটি রূপরেখাও তুলে ধরেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, “বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ থাকা জরুরি ছিল। শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “অতিরিক্ত সুদের হার, কর ও শুল্ক বৃদ্ধির কারণে শিল্প খাত চাপে পড়বে। পাশাপাশি ছোট, কুটির ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বাজেটে কোনো উল্লেখযোগ্য সহায়তা রাখা হয়নি।”
বাজেটে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও স্কুলের ওপর কর আরোপ, অনলাইন ব্যবসায় শুল্ক বৃদ্ধি, পুঁজিবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রণোদনার অভাব এবং অপ্রয়োজনীয় ও দুর্নীতিগ্রস্ত উন্নয়ন প্রকল্প বাতিল না করায় হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট মানবিক উন্নয়নে কেন্দ্রিত, শিল্প ও কর্মসংস্থানেও গুরুত্ব
বিএনপি নেতা জানান, দলটি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পূর্ণ করমুক্ত রাখা হবে।
দাম বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, “বর্তমানে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কে অবস্থান করছে। সেটিকে ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা অবাস্তব। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে ২৭ লাখ মানুষ আরও দারিদ্র্যের মুখে পড়েছে।”
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য তুলে ধরে খসরু বলেন, “২০২৪–২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৩.৯৭ শতাংশ। অথচ এই বাজেটে ৫.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, যা বাস্তবতা বিবর্জিত এবং শুধুমাত্র দেখনদারির জন্য।”