প্রকাশিত: ২৫ মে ২০২৫, ১:৫০ এএম
সিলেট প্রতিবেদক
সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় বিলবোর্ড ও সাইনবোর্ড স্থাপনের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের জীবনে ঝুঁকি যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। এমনই একজন শ্রমিক মোহাম্মদ বিল্লাল মিয়া, যিনি প্রায় ১৩ বছর ধরে এই পেশায় আছেন।
বিল্লাল জানান, “নতুন নতুন যখন এই পেশায় ঢুকছিলাম, খুব ডর করতো। এখন আর তেমন লাগে না। অভ্যাস হয়ে গেছে।”
তার ভাষ্য অনুযায়ী, কোম্পানি থেকে সেফটি বেল্ট, হেলমেট দেওয়া হলেও তা ব্যবহার করেন না অনেক শ্রমিক। “গরমে মাথা ঘামে, হেলমেট পরলে আরও কষ্ট হয়। তাই আমরা নিজেরাই সাবধানে কাজ করি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি প্রতিদিন প্রায় ৪ ঘণ্টা কাজ করি। দিনে হাজিরা পাই ১০০০ টাকা, কারো কারো বেতন ৩০০ টাকা পর্যন্ত। দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, কিন্তু আল্লাহ না চাইলে কিছুই হবে না।”
বিল্লাল দাবি করেন, তার ১৬-১৭ বছরের অভিজ্ঞতায় কোনো বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি। তবে অন্য শ্রমিকদের অভিজ্ঞতা একরকম নয়। অনেক ক্ষেত্রেই বোর্ড লাগাতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
“নেতাদের জন্য যদি কোন বিশেষ বোর্ড লাগাই, তখন কাজটা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। কিন্তু তাও কেউ তেমন নিরাপত্তা নিয়ে ভাবে না,” বলেন তিনি।
স্থানীয় শ্রমিকদের অনেকে জানান, প্রকৃত অর্থে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও কোম্পানির পক্ষ থেকে যথাযথ মনিটরিং হয় না। নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ করলেই চলবে না, তার ব্যবহার নিশ্চিত করাটাও জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ সময় উচ্চ স্থানে কাজ করা শ্রমিকদের জন্য সেফটি গিয়ার বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত। শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নিয়মিত তদারকি প্রয়োজন।
বিল্লালের বক্তব্য শুধু একজনের অভিজ্ঞতা নয়, এটি পুরো শ্রমিক শ্রেণির নিরাপত্তাহীন জীবনের প্রতিচ্ছবি। যেখানে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও প্রতিদিন খাবার জোগাড় করতে হয়।
নিরাপত্তা নিয়ে উদাসীনতা যদি চলতেই থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এখন সময় শ্রমিক নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দেওয়ার।