ডেইলি প্রতিদিনের বাণী রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১৬ মে ২০২৫, ০৪:২৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
মাত্র ছয় মাস আগে পর্যন্তও কক্সবাজারের একটি হোটেলে ১২ হাজার টাকা বেতনে টি বয়ের চাকরি করতেন শেরপুরের নকলার যুবক বিল্লাল। আজ তিনি পরিচিত একজন কোটিপতি কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে।
বিল্লালের উত্থান যেন সিনেমার গল্প। ছোট ছোট ছড়া ও কবিতার মাধ্যমে তৈরি তার রিল ভিডিওগুলো ফেসবুকের ব্যবহারকারীদের মন জয় করেছে। নতুন কিছু বলার ভঙ্গি, আবেগময় উপস্থাপন ও সহজবোধ্য ভাষায় বিল্লাল হয়ে উঠেছেন সোশ্যাল মিডিয়ার পরিচিত মুখ।
তবে তার সাফল্যের গল্পে যেমন অনুপ্রেরণা আছে, তেমনি রয়েছে সমালোচনার ঝড়ও। অনেকেই বিল্লালের দ্রুত সাফল্যকে সন্দেহের চোখে দেখছেন। কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, তিনি হয়তো অন্য ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত। বিল্লাল অবশ্য এসব কটাক্ষকে পাত্তা না দিয়ে নিজের কনটেন্টের মাধ্যমেই জবাব দিতে চান।
নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে চান বিল্লাল। তিনি বলেন, “জীবনটা যেন ২০ তলা বিল্ডিং, যেখানে প্রতিটা সিঁড়ি পেরিয়ে তবেই উপরে ওঠা যায়।”
বর্তমানে ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে আয় করে নিজের জমিজমাও কিনেছেন বিল্লাল। স্বপ্ন দেখেন ১০০ কোটি টাকার মালিক হওয়ার। তিনি বলেন, “আমার লক্ষ্য সিআইপি হওয়া, ভিআইপি নয়। কারণ, সিআইপি মানে হলো দেশের জন্য অবদান রাখা।”
বিল্লালের কথায়, “যদি কারও ট্যালেন্ট থাকে, তবে তাকে সুযোগ দেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “নকল নয়, নতুন কিছু নিয়ে আসতে হবে। তবেই সম্ভব সাফল্য পাওয়া।”
বিল্লালের এই উত্থান অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে দেশের হাজারো তরুণকে। অন্যদিকে, কিছু কনটেন্ট নির্মাতা তার স্টাইল ও উপস্থাপনাকে অনুকরণ করছেন। এ নিয়ে সতর্ক করে বিল্লাল বলেন, “নকল করে টিকতে পারবেন না, বরং নিজেরটা খুঁজুন।”
নিজের অতীতের অভাব আর আত্মীয়দের অবহেলার কথাও অকপটে বলেন তিনি। আজ সেই আত্মীয়দের অনেকেই যোগাযোগ করছেন। বিল্লালের কথা, “সাফল্য পাওয়ার পর সবাই আপন হয়, কিন্তু কষ্টের সময়ে যারা পাশে ছিল, তারাই আসল।”
গণিতে পড়াশোনা করা এই যুবক এখন স্বপ্ন দেখেন সমাজের দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানোর। শেরপুরের এই ছেলেটি শুধু নিজের গল্প নয়, দেশের তরুণদের জন্য নতুন এক অনুপ্রেরণার নাম হয়ে উঠেছেন।