ভারতের বিহার রাজ্যে দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত দফার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গলবার। এই দফায় ২০ জেলার ১২২টি বিধানসভা আসনে ভোট দেবেন প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ ভোটার। এতে নির্ধারিত হবে রাজ্যের পরবর্তী সরকার ও বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিকের ভবিষ্যৎ।
রাজ্যের প্রধান নির্বাচন দপ্তর জানিয়েছে, মোট ৪৫,৩৯৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪০,০৭৩টি গ্রামীণ এলাকায়। সব কেন্দ্রেই ওয়েবকাস্টিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে গড়ে ৮১৫ জন ভোটার।
প্রথম দফার ভোট ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ১৮ জেলার ১২১টি আসনে, যেখানে ৬৫.০৮ শতাংশ ভোট পড়েছিল—বিহারের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
২০২০ সালের নির্বাচনে এই ১২২ আসনের মধ্যে মহাগঠবন্ধন জোট পেয়েছিল ৪৯টি, এনডিএ পেয়েছিল ৬৬টি আসন। আসাদউদ্দিন ওয়াইসির নেতৃত্বাধীন এআইএমআইএম পেয়েছিল ৫টি, আর বিএসপি ও এক স্বতন্ত্র প্রার্থী পেয়েছিলেন একটি করে আসন।
এই দফায় লড়ছেন ১,৩০২ জন প্রার্থী, যাদের মধ্যে রয়েছেন এক ডজন বর্তমান মন্ত্রী। উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছেন—
বিদ্যুৎমন্ত্রী বিজেন্দ্র প্রসাদ যাদব (সুপৌল)
শিল্পমন্ত্রী নীতিশ মিশ্র (ঝাঁঝরপুর)
পরিবহন ও যোগাযোগমন্ত্রী শীলা কুমারী মণ্ডল (ফুলপরাস)
জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশলমন্ত্রী নীরজ কুমার সিং বাবলু (ছাটাপুর)
খাদ্য ও ভোক্তা সুরক্ষা মন্ত্রী লেশি সিং (ধামদाहा)
পশুপালন মন্ত্রী রেণু দেবী (বেত্তিয়াহ), সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী
প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তারকিশোর প্রসাদ (কাটিহার), প্রাক্তন স্পিকার উদয় নারায়ণ চৌধুরী (সিকান্দরা), ও একাধিক সাবেক মন্ত্রীও এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন।
এছাড়া বিভিন্ন দলের রাজ্য সভাপতি ও নবাগত প্রার্থীরাও মাঠে আছেন। প্রশান্ত কিশোরের জন সুরাজ পার্টির প্রার্থী হিসেবে কাগরাহারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ভোজপুরি গায়ক রীতেশ পাণ্ডে। একই দলের ধীরেন্দ্র আগরওয়াল লড়ছেন গয়া টাউন থেকে।
আসন বণ্টন অনুযায়ী, বিজেপি ৫৩, জেডিইউ ৪৪, লোক জনশক্তি পার্টি (রাম ভিলাস) ১৫, হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা ৬ ও রাষ্ট্রীয় লোক মঞ্চ ৪টি আসনে লড়ছে।
অন্যদিকে, ইন্ডিয়া জোটে রাজদ ৭২, কংগ্রেস ৩৭, বিকাশশীল ইনসান পার্টি ৮, সিপিআই(এমএল) ৬, সিপিআই ৪ ও সিপিএম ১ আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
জোটের মধ্যে ছয়টি আসনে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে, যেখানে একই জোটের একাধিক দল মুখোমুখি হয়েছে—যেমন কাহালগাঁও, নারকাটিয়াগঞ্জ, সুলতানগঞ্জ ও সিকান্দরা।
ভোট সুষ্ঠু করতে মোতায়েন করা হয়েছে ১,৬২৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী।
জেডিইউ মুখপাত্র অভিষেক ঝা দাবি করেছেন, “এনডিএ ৩০ থেকে ৩৫টি আসন পেতে পারে। মোট ফলাফলে আমরা ৭৫–৮০ আসন পাওয়ার আশা করছি।”
অন্যদিকে, রাজদ মুখপাত্র মৃণাল তিওয়ারি বলেছেন, “প্রথম দফার রেকর্ড ভোটের মতো এবারও বিপুল ভোট হবে। মানুষ পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দেবে।”
