বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে প্রস্তাবিত Comprehensive Economic Partnership Agreement (CEPA) চূড়ান্ত করতে গতি আনার বিষয়ে সিউলে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন ও দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী ইউ হান-কু।
দুই পক্ষই বাংলাদেশের এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশের) উত্তরণের আগে সিইপিএ আলোচনাকে দ্রুততর করার প্রতিশ্রুতি দেন, যা দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের নতুন সুযোগ উন্মোচনে সহায়ক হবে বলে মনে করেন তারা।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক জোরদারে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, “দক্ষিণ কোরিয়া দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য উন্নয়ন অংশীদার। আমরা সিইপিএ দ্রুত চূড়ান্ত করতে আগ্রহী, যা ইলেকট্রনিকস, মোবিলিটি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, টেক্সটাইল ও অবকাঠামো খাতে কোরীয় বিনিয়োগকে বহুমাত্রিকভাবে উন্মোচন করবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কোরীয় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন কাঠামোগত প্রতিবন্ধকতা ও মূল নীতি-সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছি। এর মধ্যে কাস্টমস, রেমিট্যান্স ও ট্যাক্স সংক্রান্ত বেশ কিছু বিষয় ইতিমধ্যে আমাদের ৩২ দফা ইনভেস্টমেন্ট রিফর্ম এজেন্ডার মাধ্যমে সমাধান করা হচ্ছে।”
বাণিজ্যমন্ত্রী ইউ হান-কু, যিনি পূর্বে বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে একাধিকবার বাংলাদেশ সফর করেছেন, বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং বিনিয়োগ সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
বিডা প্রতিনিধি দল মন্ত্রী ইউকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে, যাতে তিনি কোরীয় ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলসহ এসে অবকাঠামো, ডিজিটাল সেবা ও নীতি সংস্কারে বাংলাদেশের অগ্রগতি সরাসরি দেখতে পারেন।
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার এফডিআই মজুত ১.৫৬ বিলিয়ন ডলার, যা ১৫০টিরও বেশি কোম্পানির বিনিয়োগ। এফডিআই উৎস হিসেবে কোরিয়া এখন বাংলাদেশের পঞ্চম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ।
জাতিসংঘের ২০২৫ সালের World Investment Report অনুযায়ী, কোরিয়ার বৈদেশিক বিনিয়োগ ২০২৪ সালে ৪৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা দেশটিকে বিশ্বের শীর্ষ ১০ বিনিয়োগ উৎস দেশের কাতারে রেখেছে।
বিডা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল ২০–২৫ অক্টোবর পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করবে। সফরকালে তারা ১৫০-রও বেশি কোরীয় বিনিয়োগকারীদের নিয়ে একটি সেমিনার আয়োজন করেছে এবং একাধিক G2B (government-to-business) বৈঠক সম্পন্ন করেছে।
এই সফরের জন্য IFC Bangladesh কারিগরি সহায়তা দিয়েছে।