বেলারুশ সরকার ৫২ জন রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। এর মধ্যে আছেন ভিন্নমতাবলম্বী প্রবীণ নেতা ও কয়েকজন বিদেশি নাগরিক। বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে প্রতিবেশী দেশ লিথুয়ানিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট গিতানাস নাউসেদা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকা এ মুক্তির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
লিথুয়ানিয়ায় পৌঁছেছেন মুক্তিপ্রাপ্তরা
নাউসেদা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “আজ ৫২ জন বন্দি নিরাপদে লিথুয়ানিয়ার সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। আমি ওয়াশিংটন এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই।”
বেলারুশের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বেলটা জানিয়েছে, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ১৪ জন বিদেশি নাগরিকও আছেন। এদের মধ্যে ছয়জন লিথুয়ানিয়ান, দুইজন লাতভিয়ান, দুইজন পোলিশ, দুইজন জার্মান, একজন ফরাসি এবং একজন ব্রিটিশ নাগরিক।
বিশিষ্ট ভিন্নমতাবলম্বীর মুক্তি
মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন মিকোলা স্টাতকেভিচ (৬৯), যিনি ২০১০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন এবং দীর্ঘদিন কারাভোগ করেছেন। এছাড়া সাংবাদিক ইহার লসিকও (৩৩) পাঁচ বছর কারাভোগ শেষে মুক্তি পেয়েছেন বলে জানিয়েছে রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি।
তবে বেলারুশ সীমান্তে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে, স্টাতকেভিচ লিথুয়ানিয়ায় প্রবেশে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা
যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জন কোয়েল মিনস্ক সফরে জানিয়েছেন, বেলারুশের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা বেলাভিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তিনবার বলেছেন ‘করো’, তাই আমরা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এখনও বন্দি আছেন হাজারো মানুষ
লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট নাউসেদা বলেছেন, “আমরা এখনো থামতে পারি না। বেলারুশের কারাগারে এখনো এক হাজারের বেশি রাজনৈতিক বন্দি রয়েছেন। তাদের মুক্তির জন্যও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।”
প্রেক্ষাপট
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বেলারুশে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো ষষ্ঠবারের মতো ক্ষমতায় আসেন, কিন্তু বিরোধীরা নির্বাচনকে জালিয়াতি বলে দাবি করে। এরপর কঠোর দমন-পীড়নে হাজারো মানুষ আটক হন এবং রাজনৈতিক মামলায় দণ্ডিত হন।
চলতি বছরের জুনেও দেশটিতে অন্তত ১৪ জন রাজনৈতিক বন্দি মুক্তি পেয়েছিলেন, যাদের মধ্যে ছিলেন নির্বাসিত বিরোধী নেতা সভেতলানা টিখানোভস্কায়ার স্বামী সার্গেই টিখানোভস্কি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক মুক্তির পদক্ষেপ বেলারুশ সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ হ্রাসে সহায়ক হতে পারে, তবে দেশটিতে এখনো রাজনৈতিক স্বাধীনতা সীমিত রয়ে গেছে।