চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে বছরের অন্যতম গরম দিন সোমবার রেকর্ড করতে যাচ্ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
চীনের জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর এই দিনটির জন্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা, অর্থাৎ কমলা সতর্কতা জারি করেছে। ২ কোটি ২০ লাখের বেশি জনসংখ্যার এই শহরের নাগরিকদের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বেইজিংয়ের এক শিক্ষানবিশ কর্মী লি ওয়েইজুন জানান, “গত কয়েক দিন ধরে অস্বাভাবিক গরম পড়ছে। আমি এখন আর অফিসে ফর্মাল পোশাক পরি না। এমনকি রাত ১০টার পরে ব্যায়াম করি যেন নিরাপদে থাকতে পারি।”
বিভিন্ন সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্মাণ শ্রমিকদের টানা কাজের সময় কমাতে হবে এবং বয়স্ক ও অসুস্থদের অতিরিক্ত পরিশ্রম এড়িয়ে চলতে হবে।
চীন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চরম আবহাওয়ার সম্মুখীন হচ্ছে। দেশের উত্তরাঞ্চলে প্রচণ্ড গরম থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলে চলছে বন্যা ও ভারী বৃষ্টিপাত।
২৮ বছর বয়সী ঝাং চেন জানান, “রোদ থেকে বাঁচতে আমি বাইরে গেলে ছাতা নিয়ে বের হই। আগে সাইকেল চালালেও এখন আর তা সম্ভব নয়।”
তাপমাত্রা রেকর্ডে পৌঁছালেও শহরের রাস্তায় খাবার সরবরাহকারী ডেলিভারি রাইডারদের কার্যক্রম থেমে নেই। কেউ কেউ ছায়াঘেরা জায়গায় বিশ্রাম নিচ্ছেন, আবার কেউ আইসক্রিম বা খালে নেমে গরম থেকে মুক্তির চেষ্টা করছেন।
গত বছরের জুনে বেইজিংয়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যদিও এবারের গরম সেই রেকর্ড ছাড়ায়নি, তবুও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে।
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণকারী দেশ চীন ইতোমধ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে নিঃসরণ সর্বোচ্চ সীমায় আনার এবং ২০৬০ সালের মধ্যে নিট শূন্য নিঃসরণে পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এর পাশাপাশি দেশটি নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে।
৪২ বছর বয়সী লুসি লু বলেন, “আমি বেইজিংয়ে জন্মেছি এবং এখানকার গ্রীষ্ম সব সময় এমনই ছিল। তবে যখন তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়ায়, তখন কর্মীদের জন্য ছুটি বা ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম বিকল্প থাকা উচিত।”