স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদকে অপসারণের পেছনে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই, সিদ্ধান্তটি এসেছে তার পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে। এমনটাই জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
গতকাল ঢাকায় জাতীয় পুরুষ হ্যান্ডবল চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫-এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
“এটা কোনো শাস্তি নয়,” বলেন আসিফ। “পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করতে হবে, আর সেই পারফরম্যান্স সন্তোষজনক ছিল না।”
ক্রিকেটকে দেশের প্রধান খেলা বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “দুঃখজনকভাবে আমরা ধারাবাহিকভাবে পিছিয়ে যাচ্ছি।”
তিনি জানান, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং সামগ্রিক পারফরম্যান্স বিবেচনায় বোর্ডে পরিবর্তনের প্রয়োজন স্পষ্ট ছিল।
এই পরিবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা আসে তখন, যখন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (NSC) ফারুকের পরিচালক পদ বাতিল করে। এরপর, নয় সদস্যের মধ্যে আটজন পরিচালক তার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সভাপতির পদ শূন্য হয়ে যায়। এরপর নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
আসিফ বলেন, সিদ্ধান্তটি ছিল নিয়মতান্ত্রিক এবং প্রশাসনিক।
“আমরা সরাসরি সভাপতিকে সরাইনি,” তিনি বলেন। “আমরা তার পরিচালক পদ প্রত্যাহার করেছি, যার ফলে তার সভাপতির পদও খালি হয়েছে। এটা অনেকটা খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্স খারাপ হলে তাকে দল থেকে বাদ দেওয়ার মতো। পুরোপুরি পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে নেওয়া সিদ্ধান্ত।”
সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আসিফ বলেন, সরকার তাদের সাংবিধানিক ক্ষমতার মধ্যেই কাজ করেছে।
“সরকার কোনো বাড়তি হস্তক্ষেপ করেনি,” বলেন তিনি। “আমরা আইসিসির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেছি। তারা নতুন নেতৃত্বকে স্বাগত জানিয়েছে।”
ফারুক আহমেদ অভিযোগ করেছেন, তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আসিফ বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে তার সঙ্গে কথা বলেছি। কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জবাব তিনি দিতে পারেননি। আমরা বিষয়টি চুপচাপ মিটিয়ে ফেলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তা সম্ভব না হওয়ায় ব্যবস্থা নিতে হয়েছে।”
তিনি আর কিছু বলেননি যে ঠিক কী প্রশ্ন করা হয়েছিল, বা কী কী পারফরম্যান্স সূচক বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। বিসিবির পক্ষ থেকেও এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
তবু আসিফের বক্তব্য ছিল সরাসরি। পরিবর্তনের উদ্দেশ্য ছিল ক্রিকেট উন্নয়ন।
“আমাদের লক্ষ্য ক্রিকেটকে উন্নত করা,” তিনি বলেন। “এই সিদ্ধান্ত সে উদ্দেশ্যেই নেওয়া হয়েছে।”
এই সিদ্ধান্ত দেশের ক্রীড়া প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিয়ে নতুন করে আলোচনা তৈরি করেছে। মাঠের পারফরম্যান্সে এ পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে কি না, সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে আপাতত, সরকার নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল।