শনিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এহসান এইচ মানসুর বলেছেন, যদি কোনো ব্যাংকের মূলধন ১০ শতাংশের নিচে নেমে আসে এবং প্রোভিশন ক্ষতি হয়, তবে সেই ব্যাংক লভ্যাংশ বা বোনাস দিতে পারবে না। এমন পরিস্থিতিতে কোনো কর্মকর্তা বোনাস পাবেন না।
তিনি এই মন্তব্য করেন ঢাকা একটি হোটেলে আয়োজিত কেন্দ্রীয় প্রবাসী বাংলাদেশি সংস্থা (এনআরবি) কর্তৃক আয়োজিত “ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ, আসন্ন নির্বাচন, প্রবাসীদের অংশগ্রহণ ও ভবিষ্যৎ অর্থনীতি” শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনায়।
গভর্নর মানসুর বলেন, “আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল করতে কাজ করছি। শেষ কয়েক বছরে অনিশ্চয়তা আর আর্থিক ব্যবস্থায় বিলিটি সৃষ্টি করেছে। আমরা এই ধারা পরিবর্তনের চেষ্টা করছি এবং কিছু অগ্রগতি ইতিমধ্যেই হয়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহে ২১ শতাংশ বৃদ্ধি এবং উচ্চ রপ্তানি সত্ত্বেও বৈদেশিক লেনদেনে উদ্বৃত্ত দেখা দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “উচ্চ কর্তৃপক্ষ থেকে কমিশনভিত্তিক বাণিজ্য কমেছে এবং হুন্ডির মতো অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলও হ্রাস পেয়েছে। পূর্বে প্রায় ৩০ শতাংশ প্রবাসী রেমিট্যান্স ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে যেত। আমদানি কমেনি, তবে মূল্য কমেছে। যারা মূল্য ব্যবধানের সুযোগ নিত অর্থপাচারের জন্য, তারা আর সক্রিয় নয়, যার ফলে ব্যয় কমেছে। এই উন্নতিতে ভালো প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।”
গভর্নর আরও উল্লেখ করেন, “যদি কোনো ব্যাংকের মূলধন ১০% এর নিচে নেমে আসে এবং প্রোভিশন ক্ষতি হয়, ব্যাংক লভ্যাংশ বা বোনাস দিতে পারবে না। তিন মাসের ঋণ পরিশোধ না হলে তা নন-পারফর্মিং হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হবে।”
তিনি বলেন, “গত মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকে ১০০ কোটি ডলার কিনেছে, তবে দামের বৃদ্ধি হয়নি। ডলারের অভাব না থাকলেও টাকার অভাব রয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাজ চলছে, তবে এটি সময়সাপেক্ষ। আগস্টে চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সামান্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে, তবে আমরা ৫ শতাংশে নামানোর লক্ষ্য রাখছি।”
খারাপ ঋণ বিষয়ে গভর্নর বলেন, জুন রিপোর্ট অনুযায়ী ৩০ শতাংশ ডিফল্টের ঝুঁকি রয়েছে। তিনি যোগ করেন, সরকার সঙ্গে আলোচনা রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) শুরু হবে, যেখানে পাঁচটি ব্যাংক একত্র করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই পদক্ষেপ ব্যাংকের কর্মচারী ও আমানতকারীদের জন্য এক থেকে দুই বছরের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।