তরুণদের সৃজনশীল লেখাকে স্বীকৃতি দেওয়ার এক আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের জন্য গৌরব বয়ে আনলেন আফিফা নাওয়ার। তিনি মর্যাদাপূর্ণ ‘কুইন্স কমনওয়েলথ রচনা প্রতিযোগিতা (QCEC) ২০২৫’-এর সিনিয়র ক্যাটাগরিতে ‘সিলভার অ্যাওয়ার্ড’ (রৌপ্য পুরস্কার) অর্জন করেছেন।
রয়্যাল কমনওয়েলথ সোসাইটি পরিচালিত এই প্রতিযোগিতাটি বিশ্বের প্রাচীনতম আন্তর্জাতিক স্কুল পর্যায়ের লেখালেখির আসর। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের পরিচয়, সম্প্রদায় এবং প্রকৃতির মতো বিষয়গুলো নিয়ে তাদের লেখনীর মাধ্যমে অন্বেষণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়।
আফিফার পুরস্কার বিজয়ী লেখাটি ছিল ‘মি, স্টিভ অ্যান্ড সামথিং এলস’ শিরোনামের একটি ছোটগল্প। গল্পের মূল উপজীব্য ছিল একটি সম্প্রদায়ের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা একটি উদ্ভিদের জীবনযাত্রা। তার গল্পে, একটি এতিমখানার আঙিনায় পুরোনো টায়ার থেকে গজানো একটি সূর্যমুখী ফুল স্মৃতিভ্রষ্ট এক কিশোরীর পাশে বেড়ে ওঠে। ফুলটি নীরবে মেয়েটির স্মৃতি পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম, তার বহুনামী গোল্ডফিশ ‘স্টিভের’ সাথে তার বন্ধন এবং সবশেষে একটি আত্মত্যাগের সাক্ষী হয়, যা দুজনের জীবনকেই বদলে দেয়।
গল্পটি নিয়ে আফিফা বলেন, “আমি চেয়েছিলাম সূর্যমুখী ফুলটি একটি চরিত্র হয়ে উঠুক, যা মেয়েটির সাথে সাথেই বেড়ে উঠবে। গাছপালা দেখতে শান্ত মনে হলেও তাদের চারপাশে অনেক পরিবর্তন ঘটে। আমি কল্পনা করার চেষ্টা করেছি, যদি সে চিন্তা করতে ও অনুভব করতে পারত, তবে সে কী ‘মনে রাখত’।”
আফিফা, যার পছন্দের বিষয় বই পড়া, সৃজনশীল লেখা ও ছবি আঁকা, জানান যে এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি তাকে গল্প লেখা চালিয়ে যেতে এবং অন্যদের সাথে তা ভাগ করে নিতে আরও অনুপ্রাণিত করেছে।
ঢাকার প্লেপেন স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফিফা নাওয়ার, সৈয়দ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন এবং মোসাম্মৎ সুলতানা জেসমিন দম্পতির জ্যেষ্ঠ সন্তান।
প্লেপেনের শিক্ষকরা বলেছেন, এমন একটি ঐতিহাসিক বিশ্ব প্রতিযোগিতায় আফিফার সাফল্য স্কুল এবং বাংলাদেশের জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত। তারা আশা প্রকাশ করেন যে তার এই অর্জন দেশের আরও অনেক তরুণ লেখককে তাদের নিজস্ব কণ্ঠ খুঁজে নিতে এবং তা লালন করতে উৎসাহিত করবে।
