মালয়েশিয়ায় জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৬ বাংলাদেশিকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ। বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, তারা তদন্তে মালয়েশিয়াকে পূর্ণ সহায়তা দেবে।
শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, “বাংলাদেশ হাইকমিশন ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং আটক ব্যক্তিদের পরিচয় ও অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছে।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আটককৃতদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ান আদালতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। বাকিদের ব্যাপারে তদন্ত চলছে অথবা তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
বলা হয়েছে, এই গ্রুপটি ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জন্য তহবিল সংগ্রহ ও সদস্য নিয়োগ করছিল। অভিযুক্তরা মূলত নির্মাণ খাত, পেট্রোল পাম্প ও কারখানায় কর্মরত ছিলেন।
মালয়েশিয়ার পুলিশ মহাপরিদর্শক খালিদ ইসমাইল জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বয়স ২৫ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। গ্রুপটির সদস্যসংখ্যা ছিল ১০০ থেকে ১৫০ জন।
তাদের বার্ষিক সদস্য ফি ছিল ৫০০ মালয়েশিয়ান রিংগিত এবং অতিরিক্ত অনুদানও আদায় করা হতো। এই অর্থ বিভিন্ন ই-ওয়ালেট এবং আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিসের মাধ্যমে বিদেশে পাঠানো হতো।
গ্রুপটি হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের মতো মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে নতুন সদস্য নিয়োগ, প্রচার ও ধর্মীয় ক্লাস পরিচালনা করত।
তিন ধাপে পরিচালিত অভিযানে এপ্রিল, মে এবং জুন মাসে মোট ৩৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রথম ধাপে সেলাঙ্গরে ৬ জন, দ্বিতীয় ধাপে জহরে ১৪ জন এবং তৃতীয় ধাপে ১৬ জনকে আটক করা হয়।
পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন বলেন, “আমরা মালয়েশিয়ার কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছি। যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, যে তারা জঙ্গি কার্যক্রমে যুক্ত, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “যে কোনো নেতিবাচক ঘটনা ভিসা ইস্যুতে প্রভাব ফেলতে পারে। তবে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হলে তা সামাল দেওয়া সম্ভব।”
বাংলাদেশ সরকার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রবাসীদের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে হাইকমিশন কাজ করে যাচ্ছে।
এই ঘটনার তদন্তে ইন্টারপোল ও বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সহায়তা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়া।