সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ধরে রাখল বাংলাদেশ। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত ফাইনাল লিগ ম্যাচে নেপালকে ৪–০ গোলে বিধ্বস্ত করে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জিতে নেয় তরুণী টাইগ্রেসরা।
দিনের নায়িকা ছিলেন এমএসটি সাগরিকা। আগের নেপাল ম্যাচে লাল কার্ড পাওয়ায় তিন ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেই মাঠ কাঁপালেন তিনি। ফিরেই করলেন চারটি গোল। একক নৈপুণ্যে বাংলাদেশকে শিরোপা উপহার দেন এই স্ট্রাইকার।
প্রতিযোগিতার শেষ দিন আবার ফিরে আসে কিংস অ্যারেনায়। এর আগে ম্যাচডে ৪ ও ৫ অনুষ্ঠিত হয়েছিল গ্রাউন্ড-২-তে, এক বিতর্কিত ম্যাচ চলাকালীন ভেন্যু পরিবর্তনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
বাংলাদেশের শিরোপা নিশ্চিত করতে দরকার ছিল কেবল একটি ড্র। নেপালের ছিল জয়ের বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যে খেলায় নামলেও সাগরিকার সামনে টিকতে পারেনি নেপাল রক্ষণভাগ। বাংলাদেশের কোচ পিটার বাটলার আগের ম্যাচ থেকে দলবদলে আনেন নয়টি পরিবর্তন, কেবল পুজা দাস ও এমএসটি ঐশী খাতুন আগের একাদশে ছিলেন।
খেলার শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় মিনিটেই সাগরিকা প্রথম শট নেন। পরপর কয়েকটি কর্নার আদায় করে নেয় স্বাগতিক দল। অষ্টম মিনিটে সপ্না রানির পাসে নেপাল রক্ষণের ফাঁক গলে গোলরক্ষক সুজাতা তামাংকে কাটিয়ে বল জালে পাঠান সাগরিকা।
নেপাল অবশ্য কয়েকটি উত্তেজনাকর মুহূর্ত তৈরি করে। ১৯তম মিনিটে গোলরক্ষক মাইলে আক্তারের একটি ভুল ক্লিয়ারেন্সে গোলের সুযোগ সৃষ্টি হয়। কিন্তু আফেইদা খন্দকার ও মাইলে আক্তারের দৃঢ়তায় সেই সুযোগ নষ্ট হয়।
বিরতিতে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল।
দ্বিতীয়ার্ধে পুরোপুরি দাপট দেখায় বাংলাদেশ। ৫১তম মিনিটে বাঁ পাশ দিয়ে দৌড়ে এসে সাগরিকার শট পোস্টে লাগে। পরের মুহূর্তেই উমেহলা মারমার পাস থেকে বক্সের বাইরে বল পেয়ে বাঁ পায়ে ঘুরিয়ে গোল করে ব্যবধান ২–০ করেন।
৫৮তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন সাগরিকা। জয়নব বিবি রিতার লম্বা পাসে দারুণ এক চিপ শটে তিনি বল জালে পাঠান।
৭৭তম মিনিটে মুন্কি আক্তারের পাস থেকে চতুর্থ গোলটি করেন সাগরিকা। এতে ‘পোকার’ পূর্ণ হয়। ম্যাচের ৮৭তম মিনিটে দর্শকদের দাঁড়িয়ে অভিবাদনের মধ্য দিয়ে মাঠ ছাড়েন এই দুরন্ত ফরোয়ার্ড।
এর আগে দিনের প্রথম ম্যাচে ভুটান ৫–০ গোলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ছয় পয়েন্ট নিয়ে টুর্নামেন্টে তৃতীয় স্থান অর্জন করে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের প্রথম আসরেও বাংলাদেশ ফাইনালে নেপালকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল। এবারও সেই সাফল্যের পুনরাবৃত্তি ঘটাল তরুণী টাইগ্রেসরা, যা প্রমাণ করে দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান আধিপত্য।