টেবিল টেনিসে বাংলাদেশের ব্যর্থতার বৃত্ত যেন আরও গভীর হচ্ছে। গত আগস্টে নেপালে অনুষ্ঠিত বিশ্ব টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপের দক্ষিণ এশীয় বাছাইপর্বে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর এবার এশিয়ান টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপেও ব্যর্থতার ধারা অব্যাহত রাখলো জাতীয় দল। ১১ থেকে ১৫ অক্টোবর ভারতের ভুবনেশ্বরে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টে পুরুষ ও মহিলা উভয় বিভাগেই বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক।
পুরুষদের বিভাগে বাংলাদেশ ২২টি দেশের মধ্যে ১৯তম স্থান অর্জন করেছে, যেখানে মহিলা দল ২০টি দেশের মধ্যে ২০তম, অর্থাৎ একেবারে তলানিতে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করেছে। এই ফলাফল ২০২৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের তুলনায় একটি বড় পতন। সেবার পুরুষ ও মহিলা উভয় দলই ১৪তম স্থান অর্জন করেছিল।
এর আগে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশ ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপের কাছে হেরে পাঁচটি দলের মধ্যে পঞ্চম হয়েছিল এবং বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হয়। এবারের এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে নেপাল ও মালদ্বীপের বিপক্ষে জয় পেলেও তা খেলার সার্বিক চিত্র বদলাতে পারেনি।
শুক্রবার দেশে ফেরার আগে ভারত থেকে মুঠোফোনে জাতীয় দলের সদস্য মোহাম্মদ জাভেদ আহমেদ অবশ্য এর মাঝেও ইতিবাচক দিক খোঁজার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের ফলাফল অতটা খারাপ নয়। আমরা এবার মালদ্বীপ ও নেপালকে হারিয়েছি, যাদের কাছে আগে হেরেছিলাম। যদিও আমরা যোগ্যতা অর্জন করতে পারিনি, তবে পারফরম্যান্স ভালোই ছিল। আমরা ভয়ংকর কিছু করিনি।”
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ইনডোর স্টেডিয়ামে বছরব্যাপী আবাসিক প্রশিক্ষণ এবং ২৫ বছর বয়সী থাই কোচ পাতারাত্রন পাসারার নিয়োগের পরেও বাংলাদেশের টেবিল টেনিসের স্থবিরতা কাটেনি। যে উন্নতির আশা করা হয়েছিল, তা বাস্তবে আসেনি। পুরুষ দল থাইল্যান্ড ও কাতারের কাছে ৩-০ ব্যবধানে এবং কিরগিজস্তানের কাছে পরাজিত হয়েছে। অন্যদিকে, মহিলা দল চাইনিজ তাইপে ও উজবেকিস্তানের কাছে ৩-০ এবং ম্যাকাওয়ের কাছে ৩-২ ব্যবধানে হেরেছে।
কর্মকর্তারা এবার জাতীয় র্যাঙ্কিংয়ের পরিবর্তে ট্রায়ালের ভিত্তিতে দল নির্বাচনের একটি নতুন প্রক্রিয়া চালু করেন, যা খেলোয়াড়দের মধ্যে অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই র্যাঙ্কিং অনুযায়ী দল নির্বাচন পছন্দ করেন। ক্রীড়া সংশ্লিষ্টদের মতে, অভ্যন্তরীণ কোন্দল, দুর্বল দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং খেলোয়াড় ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে যোগাযোগের অভাবই এই ক্রমাগত পতনের জন্য দায়ী।