বাংলাদেশ সরকার বিদ্যুৎ খাতে ভারতের আদানি পাওয়ারের বকেয়া পরিশোধের অংশ হিসেবে জুন মাসে এককভাবে সর্বোচ্চ ৪৩৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিভিত্তিক সকল আর্থিক দায় পরিশোধ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
সূত্র অনুযায়ী, এখন বাংলাদেশ নিয়মিতভাবে মাসিক ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করছে। পাশাপাশি দুই মাসের বিল পরিমাণ এলসি এবং সকল পাওনার জন্য রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টিও প্রদান করা হয়েছে, যা আদানিকে আর্থিকভাবে নিরাপদ অবস্থানে এনেছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী আদানি পাওয়ারকে উভয় ইউনিট থেকেই পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ সরবরাহের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
গত বছর অর্থনৈতিক সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ আদানি পাওয়ারের বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তি অনুযায়ী পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছিল। সে সময় আদানি সরবরাহ অর্ধেকে কমিয়ে দেয়। চলতি বছরের মার্চে আবার পূর্ণ সরবরাহ শুরু হয়।
আদানি পাওয়ার ভারতের ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলায় ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। এই কেন্দ্রটি বাংলাদেশের মোট চাহিদার প্রায় ১০ শতাংশ পূরণ করছে।
চুক্তি অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে ২৫ বছরের জন্য উৎপাদিত সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বাংলাদেশে সরবরাহ করার কথা রয়েছে। তবে মাঝখানে বিলম্ব হওয়ায় আদানি বিদ্যুৎ সরবরাহ হ্রাস করে।
বর্তমানে সকল অর্থনৈতিক জটিলতা সমাধান হওয়ায়, আদানি পাওয়ারের আর্থিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়ে উঠেছে এবং এর ফলে প্রতিষ্ঠানটির ক্রেডিট রেটিং বর্তমান AA থেকে AA+ এ উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহের খরচ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে অন্যান্য বিকল্প উৎসের তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম।
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা সরকারের সময় করা চুক্তিগুলোর স্বচ্ছতা নিয়ে বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিছু প্রশ্ন তুললেও, তদন্তে আপত্তিকর কিছু পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।
বর্তমানে আদানি পাওয়ারের গোড্ডা প্রকল্প মূল কোম্পানির সঙ্গে একীভূত হওয়ায় পরিচালন ও আর্থিক সমন্বয় আরও দৃঢ় হয়েছে। দেশজুড়ে বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলায় এটি একটি কার্যকর সংযোজন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।