বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে ষষ্ঠ পররাষ্ট্র দপ্তর পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে বৃহস্পতিবার সকালে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে।
বাংলাদেশের পক্ষে বৈদেশিক সচিব আসাদ আলম সিয়াম এবং নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি জেনারেল ক্রিস্টিয়ান রেবার্গেন নিজ নিজ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও অভিন্ন মূল্যবোধের পরিবেশে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
দুই দেশ চলমান সহযোগিতার পরিধি পর্যালোচনা করে নতুন সম্ভাবনা চিহ্নিত করেছে। তারা শান্তি ও উন্নয়নের অভিন্ন লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল অন্তর্বর্তী সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থা ও সংস্কার কার্যক্রমে নেদারল্যান্ডস সরকারের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানায়।
নেদারল্যান্ডস প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সুসংহত করতে অব্যাহত সহায়তার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করে।
বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, যৌথ উদ্যোগ এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার নতুন সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বাংলাদেশ পক্ষ এলডিসি থেকে উত্তরণের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিএসপি প্লাস সুবিধার আওতায় বাজারে প্রবেশাধিকার বজায় রাখতে নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতা চায়।
দুই দেশ পানি ব্যবস্থাপনা ও দুর্যোগ সহনশীলতা বিষয়ে চলমান সহযোগিতা পর্যালোচনা করে। এতে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ বাস্তবায়নে নেদারল্যান্ডসের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও অবদানের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
বৈঠকে কৃষি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বন্দর অবকাঠামো, জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজভাঙা শিল্প এবং ডিজিটাল রূপান্তরে সহযোগিতা বৃদ্ধির সুযোগ নিয়েও আলোচনা হয়।
শিক্ষা, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও জ্ঞান বিনিময়ে অংশীদারিত্ব জোরদার করার ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়।
এছাড়া, গাজা শান্তি প্রক্রিয়া, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি এবং মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্ব নিয়েও মতবিনিময় হয়।
দুই দেশ জাতিসংঘ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও ন্যায়সংগত উন্নয়ন অর্থায়নে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নেদারল্যান্ডসের অব্যাহত সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানায়। উভয় পক্ষ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
দুই দেশ আগামী বছর ঢাকায় পরবর্তী পররাষ্ট্র দপ্তর পরামর্শ সভা আয়োজনের বিষয়ে একমত হয়।