যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ এখনও প্রতিযোগীদের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে বাণিজ্যিক চুক্তির ক্ষেত্রে। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য অনেকটাই নির্ভর করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কার্যকর শুল্কনীতি থাকার ওপর, কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমরা প্রতিযোগীদের তুলনায় পিছিয়ে আছি।”
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)-এর সেন্টার ফর ম্যাক্রোইকোনমিক অ্যানালাইসিস (সিএমইএ) এবং অস্ট্রেলিয়া সরকারের ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড (ডিএফএটি) যৌথভাবে আয়োজিত মাসিক ম্যাক্রোইকোনমিক ইনসাইটসের (এমএমআই) জুলাই সংখ্যার আলোচনায় এই মত উঠে আসে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, দেশের আর্থিক পরিসর সীমিত এবং করনীতি, ঋণ ব্যবস্থাপনা ও জিডিপি হিসাব পদ্ধতিতে সংস্কার অপরিহার্য। তিনি বলেন, “নীতিনির্ধারণ ও বাস্তবায়নের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন না থাকলে কার্যকর সংস্কার সম্ভব নয়।”
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জায়েদি সাত্তার ও প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান।
ড. সাত্তার বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও বিনিয়োগনির্ভর, ভোক্তানির্ভর নয়। বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে ধীরগতি এবং বিনিয়োগ জিডিপির তুলনায় ২৯ শতাংশে নেমে আসায় প্রবৃদ্ধি কমে যাচ্ছে, যদিও সামগ্রিক অর্থনীতি স্থিতিশীল আছে।”
তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ মূলত শ্রমনির্ভর শিল্প যেমন তৈরি পোশাক ও জুতার মাধ্যমে রপ্তানি করছে। কিন্তু শুধুমাত্র তুলনামূলক সুবিধা ধরে রাখা এখন আর যথেষ্ট নয়। আমাদের প্রতিযোগীরা যদি উন্নত বাণিজ্য চুক্তি পেয়ে যায়, তবে আমরা পিছিয়ে পড়ব। এটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।”
ড. আশিকুর রহমান বলেন, আর্থিক খাতে সুশাসন ফেরাতে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা ফল দিতে হলে আগামী এক থেকে তিন বছর পর্যন্ত ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।
পিআরআই নির্বাহী পরিচালক খুরশিদ আলম বলেন, রাজস্ব আহরণ এখনও একটি বড় চ্যালেঞ্জ এবং এনবিআর-এ নীতিনির্ধারণ ও বাস্তবায়নকে আলাদা করার কাজ এখনো চলমান।
আলোচনায় বক্তারা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে শুধু স্বল্প খরচের শ্রমনির্ভর রপ্তানি নয়, কার্যকর ও সময়োপযোগী বাণিজ্য চুক্তির দিকেও নজর দিতে হবে। সেই সঙ্গে কাঠামোগত সংস্কার ছাড়া টেকসই প্রবৃদ্ধি সম্ভব নয়।