বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বুধবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের উপর শুল্ক কমানোর বিষয়ে দেশটি আশাবাদী।
বাংলাদেশ সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কাউন্সিল কমিটির সাপ্তাহিক সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি যুক্তরাষ্ট্র আমাদের জন্য শুল্ক হ্রাস করবে।”
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ কিছু জরুরি পণ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করবে। তবে বর্তমানে সেই পণ্যের নাম প্রকাশ করা হবে না বলে জানান উপদেষ্টা।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি খুবই কম বলে উল্লেখ করেন তিনি। বর্তমানে ঘাটতির পরিমাণ ৬.৫ থেকে ৬.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে।
গম আমদানির বিষয়ে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, “রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে গম আমদানিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, ব্ল্যাক সি অঞ্চলে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক হ্রাস নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে।
গমের দামের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের গমে প্রোটিনের মাত্রা কিছুটা বেশি হলেও অশুদ্ধতার মাত্রা অনেক কম। দাম কিছুটা বেশি হলেও আমরা কিছু সুবিধা পাবো এবং বাণিজ্য ভারসাম্য আনার জন্য কিছু তো আমদানি করতেই হবে।”
উপদেষ্টা বলেন, এই আমদানির মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা কমানো সম্ভব হবে।
তিনি জানান, বাণিজ্য উপদেষ্টা শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবেন। ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের ওপর প্রযোজ্য বাড়তি শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগেই তিনি ইউএসটিআরের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এই পরিস্থিতিতে লবিস্ট নিয়োগের সুফল মিলবে না বলে মন্তব্য করেন অর্থ উপদেষ্টা।
ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তিনি বলেন, “ব্যবসায়ীরা এই আলোচনায় প্রবেশ করতে পারবেন না। তারা শুধু বাইরে আওয়াজ করতেই পারবেন, সেটাও কাজে আসবে না।”
যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাতের গুরুত্ব স্বীকার করে তিনি বলেন, “আমি ইউএস চেম্বারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বাংলাদেশের বিষয়ে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করে।”
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৭ জুলাই প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুসকে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন।
চিঠিতে ট্রাম্প লেখেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক শক্তিশালী হলেও দীর্ঘদিনের বাণিজ্য ঘাটতির কারণে নতুন ভারসাম্যমূলক পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।”
তবে নতুন ঘোষিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক আগের তুলনায় ২ শতাংশ কম। তিন মাস আগে যেটি ৩৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২০ শতাংশ শুল্কে বাণিজ্য চুক্তি করেছে।
বাংলাদেশ এখন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক হ্রাস ও রপ্তানি অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে কৌশলী আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।