বাংলাদেশে ফুটসালের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। আন্তর্জাতিক ফুটসাল কোচ সাঈদ খোদারহমিকে তিন মাসের জন্য নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বিএফএফ)। ৫৯ বছর বয়সী এই ইরানি কোচের প্রধান লক্ষ্য হলো আগামী ২০ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠেয় এএফসি ফুটসাল এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে অংশ নেওয়ার জন্য জাতীয় পুরুষ দল গঠন ও প্রস্তুত করা।
এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোনো দল এএফসি ফুটসালের মঞ্চে অংশ নিচ্ছে। গ্রুপ জি তে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও স্বাগতিক মালয়েশিয়া। আটটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন এবং সেরা সাত রানার-আপ পাবে ২০২৬ সালে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠেয় মূল পর্বে খেলার সুযোগ।
ঢাকায় আনুষ্ঠানিক পরিচিতি অনুষ্ঠানে কোচ সাঈদ বলেন, “বাংলাদেশ এখনো ফুটসালের ক্ষেত্রে শিশুর মতো, আর ইরান যেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়। আমার শহর ইসফাহানে ১,০০০-এর বেশি ফুটসাল স্টেডিয়াম আছে, প্রতিটি গ্রামেই একটি করে রয়েছে।”
তবে পার্থক্য সত্ত্বেও এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তার ভাষায়, “আমি চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। মিয়ানমারে যখন শুরু করেছিলাম, পরিস্থিতি একই রকম ছিল। পাঁচ বছরে তারা অনেক উন্নতি করেছে। আশা করি বাংলাদেশেও আমি একটি ইতিবাচক অবদান রাখতে পারব।”
সাঈদ জানিয়েছেন, শুধু রাজধানীকেন্দ্রিক দল নয়, তিনি সারাদেশ থেকেই প্রতিভা খুঁজে বের করতে চান। “একটি জাতীয় লিগ ও সারাদেশে অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে,” বলেন তিনি। এছাড়াও গণমাধ্যম এবং জনগণের সহানুভূতির আহ্বান জানান তিনি।
বিএফএফ এর মাধ্যমে ইতোমধ্যেই ট্রায়াল শুরু হয়েছে এবং এই সপ্তাহেই প্রাথমিক দল চূড়ান্ত করবেন বলে জানান কোচ। এর পাশাপাশি তিনি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাতেও বিশ্বাসী। “আমার ভুল হতে পারে, তবে আমাকে গঠনমূলক সমালোচনা দিন। প্রশংসার চেয়ে প্রগতির জন্য সহায়তা চাই,” বলেন তিনি।
সাঈদ খোদারহমি ২০০০ সাল থেকে ইরান ফুটবল ফেডারেশনের সাথে যুক্ত এবং ২০১০ সাল থেকে এএফসি’র ফুটসাল প্রশিক্ষক হিসেবেও কাজ করছেন। তিনি ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মিয়ানমারের পুরুষ ও নারী ফুটসাল দলের কোচ ছিলেন।
বাংলাদেশে পা রেখে ব্যক্তিগত অনুভূতিও শেয়ার করেছেন তিনি। “আমার পরিবার ভেবেছিল আমি হয়তো এখানকার খাবার খেতে পারব না, কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মনে হচ্ছে আমি এখনো ইরানেই আছি।”
ইরানি এই কোচের আগমনের মধ্য দিয়ে দেশের ফুটসাল যাত্রা শুরু হলো এক নতুন আশাবাদের সঙ্গে। এখন দেখার পালা, তার অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বে বাংলাদেশ কিভাবে এগিয়ে যায় এই নতুন খেলাধুলার ধারায়।