সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার বৃষ্টিতে শেষ ওয়ানডে টি২০ বাতিল হলেও আগেই সিরিজ জিতে নিয়েছিল বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডসকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে কাজ সেরেছে টাইগাররা। কিন্তু সামনে এশিয়া কাপের আগে ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
অধিনায়ক লিটন দাসের ব্যাটিং ছিল উজ্জ্বল দিক। তিন ম্যাচে দুটি অর্ধশতক হাঁকিয়ে সিরিজের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন তিনি। তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে স্পষ্ট হয়েছে আত্মবিশ্বাস। ম্যাচ শেষে লিটন বলেন, “সিরিজে যারা সুযোগ পেয়েছে, সবাই ভালো ক্রিকেট খেলেছে। সবকিছুই ইতিবাচক মনে হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, সিলেটের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পই দলকে বদলে দিয়েছে। লিটনের ভাষায়, “এমন ক্যাম্প আমি আগে দেখিনি। যেরকম প্রস্তুতি আমরা চেয়েছিলাম, তা সিলেটেই সম্ভব হয়েছে।”
ফিটনেস, ফিল্ডিং ও অনুশীলনে উন্নতির কথা শোনা গেলেও ব্যাটিং অর্ডারে সমস্যা থেকেই গেছে। ওপেনিংয়ে তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ ইমন কিছুটা স্থিতিশীল হলেও চতুর্থ স্থানে ব্যর্থ হচ্ছেন তাওহিদ হৃদয়। শেষ ১০ ইনিংসে তিনি কোনোবারই ৩১ রানের বেশি করতে পারেননি, যার মধ্যে চারবার এক অঙ্কের রান। সর্বশেষ ম্যাচে ৯ বলে ১৪ রান করে ফিরেছেন। লিটন তাকে “বড় ম্যাচের খেলোয়াড়” বলে আস্থা দেখালেও পরিসংখ্যান অন্য কিছু বলছে।
বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সমস্যা হলো, শুরুটা ঝলমলে হলেও শেষদিকে গতি হারায় ব্যাটিং লাইনআপ। ফলে ১৬০-১৭০ রানেই থেমে যায় দল। অথচ বর্তমান টি২০ ক্রিকেটে ১৯০-২০০ রানই এখন স্বাভাবিক লক্ষ্য।
অন্যদিকে বোলিং আক্রমণ ছিল ভরসার জায়গা। প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ১৩৭ রানে থামানো এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ১০৩ রানে গুটিয়ে দেওয়া প্রমাণ করেছে বোলারদের বৈচিত্র্য। তবে প্রতিপক্ষ পূর্ণ শক্তির ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে খেলেনি, আর বাংলাদেশও রান ডিফেন্ড করার পরীক্ষা দিতে পারেনি। সেই চ্যালেঞ্জ আসবে এশিয়া কাপে।
ফিল্ডিংয়ে অবশ্য বাংলাদেশ আশার আলো দেখিয়েছে। জাকের আলির বাউন্ডারি সেভ, হৃদয়ের চমৎকার ক্যাচ আর সাইফ হাসানের সরাসরি থ্রো প্রমাণ করেছে সিলেট ক্যাম্প কাজে দিয়েছে।
সব মিলিয়ে সিরিজ জয়ের পরেও পুরনো সমস্যা থেকে গেছে। মধ্যক্রমের ভঙ্গুরতা, ইনিংসের গতি হারানো আর বড় সংগ্রহ গড়তে না পারা এখনও চিন্তার কারণ। বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে উন্নতি থাকলেও সামনে আসল পরীক্ষা এশিয়া কাপেই দিতে হবে বাংলাদেশকে।