কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত তৃতীয় ও সিরিজ নির্ধারনী টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজ জয় করে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। ২১ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নেয় টাইগাররা।
বাংলাদেশের জয়ের মূল নায়ক ছিলেন ওপেনার তানজিদ হাসান। মাত্র ৪৭ বলে অপরাজিত ৭৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি, যার মধ্যে ছিল ছয়টি ছক্কা। এই ইনিংসটি শ্রীলঙ্কার গোটা ইনিংসে করা ছক্কার সংখ্যার দ্বিগুণ।
তানজিদের সঙ্গে ওপেনিংয়ে লিটন দাস করেন ৩২ রান এবং শেষ দিকে তৌহিদ হৃদয় অপরাজিত ২৭ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেন। একপ্রান্তে সাবলীল তানজিদ আর অন্যপ্রান্তে স্থির হৃদয়—এই যুগলবন্দিতেই স্বপ্নময় জয় পায় বাংলাদেশ।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩২ রান করে শ্রীলঙ্কা। বল হাতে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন অফস্পিনার মেহেদি হাসান, ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে ৪টি উইকেট তুলে নেন, যা তাঁর ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার।
শুরুতেই কুশল মেন্ডিসকে তুলে নেন শরিফুল ইসলাম। এরপর মেহেদি একাই ধস নামান লঙ্কান শিবিরে। তাঁর শিকার হন কুশল পেরেরা, দিনেশ চান্ডিমাল ও অধিনায়ক চরিত আসালাঙ্কা।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে একমাত্র প্রতিরোধ গড়েন পাথুম নিশাঙ্কা। ৩৯ বলে ৪৬ রান করে তিনি দলকে কিছুটা স্থিতি এনে দেন। তবে মেহেদি তাঁর ফেরত ধরা বলেই নিশাঙ্কাকে বিদায় করেন। এরপর কামিন্দু মেন্ডিস ও দাসুন শানাকা কিছুটা লড়াই করলেও বড় সংগ্রহ গড়তে ব্যর্থ হয় স্বাগতিকরা।
শানাকা ২৫ বলে ৩৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেললেও বাংলাদেশি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং ও চতুর ফিল্ডিংয়ের কাছে সীমানা পেরুনো সম্ভব হয়নি শ্রীলঙ্কার।
এই ঐতিহাসিক জয়ে টাইগারদের প্রশংসা করছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। শ্রীলঙ্কার মাঠে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় ভবিষ্যতের জন্য দলকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে বলেও মত ক্রিকেটবোদ্ধাদের।
বিশেষ করে তানজিদ ও মেহেদির পারফরম্যান্সকে বাংলাদেশের ক্রিকেটের নতুন সম্ভাবনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। আগামীর চ্যালেঞ্জে এই দুই তরুণ হতে পারেন দলের চালিকাশক্তি।