বাংলাদেশ ব্যাংককে সংবিধানিক সংস্থার মর্যাদা দিতে চূড়ান্ত করা হয়েছে একটি নতুন অধ্যাদেশের খসড়া। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যক্রমে সরকারী নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপ পুরোপুরি বন্ধ করা হচ্ছে।
‘বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ২০২৫’ শীর্ষক খসড়া অধ্যাদেশটি ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) ও বিশ্ব ব্যাংকের (WB) পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক সূত্র।
নতুন অধ্যাদেশে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের আর্থিক খাত এবং মুদ্রানীতির বিষয়ে সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব পাবে। একইসঙ্গে এটি কেবলমাত্র জাতীয় সংসদের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অভূতপূর্ব স্বাধীনতা দেবে।
এই উদ্যোগ কার্যকর হলে সরকারী নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি থেকে মুক্ত হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব নীতিমালায় কাজ করতে পারবে।
নতুন প্রস্তাবিত কাঠামোয় গর্ভনর ও উপ-গর্ভনর নিয়োগের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় বছর। প্রধানমন্ত্রী একটি প্রস্তাবিত তালিকা সংসদের কাছে পাঠাবেন এবং সংসদ থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে। গর্ভনর ও উপ-গর্ভনরের শপথ পড়াবেন প্রধান বিচারপতি।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নীতিগত স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।
অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যকার দূরত্ব বজায় রেখে শুধু সংসদীয় জবাবদিহিতার আওতায় আনা হলে নীতিনির্ধারণে গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে।
অধ্যাদেশটি চলতি বছরের শেষ নাগাদ অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানসমূহের চাপ এবং অভ্যন্তরীণ আর্থিক দুর্বলতা থেকেই এই সংস্কারের উদ্যোগ এসেছে, যা আন্তর্জাতিক মুদ্রা সহায়তা প্রাপ্তিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।