বাংলাদেশের এভিয়েশন নিরাপত্তা ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উচ্চ প্রশংসা অর্জন করেছে। যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ট্রান্সপোর্ট (ডিএফটি) পরিচালিত সর্বশেষ নিরাপত্তা মূল্যায়নে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর exceptional রেটিং পেয়েছে।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সার্বিক মূল্যায়নে ৯৩ শতাংশ এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা (কার্গো) মূল্যায়নে শতভাগ নম্বর পেয়েছে। অন্যদিকে, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সার্বিক মূল্যায়নে ৯৪ শতাংশ এবং কার্গো নিরাপত্তায় শতভাগ নম্বর অর্জন করেছে।
যুক্তরাজ্যের ডিএফটি-এর এই মূল্যায়ন কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো, যুক্তরাজ্যে ফ্লাইট পরিচালনাকারী বিদেশি বিমানবন্দরগুলো যাত্রী ও কার্গো উভয়ের জন্য শক্তিশালী নিরাপত্তা মান বজায় রাখছে কিনা তা নিশ্চিত করা। ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ পরিদর্শন কর্মসূচি চালু রয়েছে, যার অধীনে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিপালন যাচাই করার জন্য পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন পরিচালিত হয়।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এই ফলাফলকে বাংলাদেশের এভিয়েশন নিরাপত্তা অগ্রগতিতে একটি মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেছে। এক বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ বলেছে, “এই অর্জন আমাদের এভিয়েশন নিরাপত্তা ব্যবস্থার দৃঢ়তাকে প্রতিফলিত করে, যা জাতীয় এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি জড়িত।”
কর্তৃপক্ষ স্মরণ করে যে, ২০১৬ সালে কার্গো স্ক্রিনিংয়ে দুর্বলতার কারণে ঢাকা থেকে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে সরাসরি পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। এর ফলে রপ্তানিকারকদের তৃতীয় দেশে পণ্য পুনরায় স্ক্রিনিং করতে হতো, যা ছিল ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ।
এরপর বেবিচক এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ অবকাঠামো, সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণের মানোন্নয়ন করে। কার্গো অপারেশনের জন্য এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইডিএস) এবং এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন ডগ (ইডিডি) এর মতো উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করা হয়।
কর্মকর্তারা বলেছেন, এই অসামান্য স্কোর প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ অতীতের চ্যালেঞ্জগুলো সফলভাবে মোকাবেলা করেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “যুক্তরাজ্যের এই স্বীকৃতি বিশ্বব্যাপী অংশীদারদের আশ্বস্ত করবে যে আমাদের এভিয়েশন এবং কার্গো নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক প্রত্যাশা পূরণ করে।” এটি বিদেশি এয়ারলাইন্স, নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা বাড়াবে এবং ভবিষ্যতে বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতার ঝুঁকি কমাবে।
বেবিচক জানায়, এই সাফল্য “দূরদর্শী নেতৃত্ব, একটি অবিচল নিয়ন্ত্রক কাঠামো এবং উভয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দ্বারা এভিয়েশন নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকর বাস্তবায়নের” ফল। কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের এভিয়েশন নিরাপত্তাকে আরও উন্নত করতে এবং এই অঞ্চলের অন্যতম বিশ্বস্ত এয়ার ট্রান্সপোর্ট হাব হিসেবে অবস্থান বজায় রাখতে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।