স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সাজিব ভূঁইয়া রোববার বলেছেন, সুযোগ পেলে তিনি দেশের নাগরিকদের বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণের আওতায় আনবেন।
ফেসবুক পোস্টে ভূঁইয়া যুক্তি দিয়ে বলেন, তরুণদের মধ্যে প্রাথমিক সামরিক শিক্ষা এবং উচ্চতর সচেতনতা জাতিকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে যারা, তার ভাষায়, “আমাদের শৃঙ্খলে আবদ্ধ রাখতে” চায়।
তিনি প্রতিপক্ষদের অভিযুক্ত করেন প্রস্তাবিত আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণ প্রকল্প লাইনচ্যুত করতে প্রচারণা চালানোর। তিনি অভিযোগ করেন, ব্যবস্থার মধ্যে “দাস এজেন্টরা” ইচ্ছাকৃতভাবে আট মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রকল্পের অনুমোদন বিলম্বিত করেছে।
তিনি লেখেন, “এখন যখন প্রকল্পটি অবশেষে বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন সংবাদপত্রগুলো একটি বর্ণনা তৈরি করা শুরু করেছে।”
আসিফ উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ জাতীয় ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) ক্যাডেটরা তাদের বার্ষিক ক্যাম্পে উন্নত নির্দেশনা পান এবং তিনি নিজেও অনুরূপ প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে এই প্রশিক্ষণ আরও উন্নত হওয়া উচিত এবং অনেক বড় পরিসরে পরিচালিত হওয়া উচিত।”
আসিফ বলেন, কর্মসূচি সম্প্রসারণের সুযোগ পেলে তিনি সকল নাগরিকের জন্য প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করার ইচ্ছা পোষণ করেন।
তিনি যোগ করেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে, সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য নাগরিক প্রতিরক্ষা এবং সামরিক সক্ষমতা শক্তিশালী করা অপরিহার্য।
উপদেষ্টার এই মন্তব্যগুলো রোববার তার ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়। তিনি এই উদ্যোগকে একটি দলীয় পদক্ষেপ হিসেবে নয় বরং জনসাধারণের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে উপস্থাপন করেন।
আসিফ মাহমুদের এই প্রস্তাব নিয়ে দেশের বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। সমর্থকরা এটিকে জাতীয় প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধির একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখতে পারেন, অন্যদিকে সমালোচকরা এর বাস্তবায়ন এবং প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্যাডেট কোর বর্তমানে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাভিত্তিক সামরিক প্রশিক্ষণ প্রদান করে। এই সংগঠন দেশপ্রেম, শৃঙ্খলা এবং নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশে কাজ করে।
উপদেষ্টার প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে তা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং যুব উন্নয়ন কর্মসূচিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে। তবে এমন ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সম্পদ, অবকাঠামো এবং প্রশিক্ষিত কর্মীর প্রয়োজন হবে।
বিশ্বের অনেক দেশে বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা বা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বেশ কয়েকটি দেশে নাগরিকদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হয়।
আসিফ মাহমুদের এই প্রস্তাব জাতীয় নিরাপত্তা, যুব উন্নয়ন এবং নাগরিক দায়িত্ব নিয়ে নতুন আলোচনার সূত্রপাত করতে পারে।
