সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অর্থপাচার মামলায় আরামিট গ্রুপের এক কর্মকর্তা আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (চট্টগ্রাম মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট) মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল আরামিটের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) জাহাঙ্গীর আলমের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। তিনি জাবেদসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে মিলে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের কথা স্বীকার করেন।
দুদক গত বুধবার জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে। অভিযোগ ছিল, তিনি সাবেক মন্ত্রীর নামে ইস্যু হওয়া ১১টি চেক ব্যবহার করে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। ওই দিনই দুদক চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ২ লাখ টাকা উদ্ধার করে।
এর আগে গত ২৪ জুলাই দুদকের উপপরিচালক মোশিউর রহমান চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় জাবেদ, তার স্ত্রী রুকমিলা জামান (সাবেক ইউসিবিএল চেয়ারপারসন), তাদের ভাইবোনসহ ৩১ জনকে আসামি করা হয়।
আরামিটের দুই এজিএম মো. আবদুল আজিজ ও উত্তপল পালকেও আসামি করা হয়েছে। তারা গত ১৭ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন এবং পরে তিনটি পৃথক মামলায় তাদের নাম দেখানো হয়। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোকররম হোসেন জানান, জাহাঙ্গীর আদালতে জাবেদ, উত্তপল পাল ও আরেক কর্মকর্তা সৈয়দ কামরুজ্জামানের সঙ্গে অর্থপাচারে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, উত্তপল সরাসরি জাবেদের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে বিদেশে সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও বিনিয়োগের দায়িত্ব পালন করতেন, বিশেষ করে দুবাই ও যুক্তরাজ্যে। অন্যদিকে আজিজ বাংলাদেশে জাবেদের সম্পত্তি কেনা, বিক্রি ও দেখভালের কাজ করতেন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর দুদক জাবেদের স্ত্রীর চালক মো. ইলিয়াস তালুকদারের শিকলবাহা বাসা থেকে ২৩ বস্তা নথি জব্দ করে। প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর ও দুবাই ছাড়াও জাবেদের সম্পদের বিস্তার রয়েছে ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও কম্বোডিয়ায়।
সাবেক মন্ত্রীর বিদেশে বিপুল সম্পদের অভিযোগ জাতীয় নির্বাচনের আগেই সামনে আসে। এর পর তাকে নতুন মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি। দুদক জানিয়েছে, জাবেদ অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্তাধীন। এর আগে তার বিরুদ্ধে ৬টি মামলায় মোট ১২৪ কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জাবেদ স্ত্রী ও পরিবার নিয়ে লন্ডনে চলে যান।