‘দ্য ওয়েডিং ব্যাংকোয়েট’ পরিচালনা করতে গিয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি পরিচালক অ্যান্ড্রু আহন। কান্নায় ভেসেছেন বারবার। এমনটাই জানালেন তিনি মল্টায় আয়োজিত তৃতীয় Mediterrane Film Festival-এ অংশ নিয়ে।
এই সিনেমাটি মূলত আং লি পরিচালিত ১৯৯৩ সালের কালজয়ী রোমান্টিক কমেডির আধুনিক রূপ। নতুন সংস্করণটি বিশ্বজুড়ে প্রদর্শিত হচ্ছে বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে। সান্ড্যান্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল থেকে শুরু করে লন্ডনের BFI Flare, সোনোমা, মিয়ামি, উইসকনসিন, ট্রাইবেকা ও লস অ্যাঞ্জেলসের একাধিক উৎসবে অংশ নিয়েছে চলচ্চিত্রটি।
অ্যান্ড্রু আহন জানান, আং লি নিজে ছবিটি দেখে প্রশংসা করেছেন এবং পুরো নির্মাণ প্রক্রিয়ায় পরোক্ষভাবে সমর্থন দিয়েছেন। “তিনি আমাদের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন। স্ক্রিপ্টে নিজস্ব ছাপ রাখার সুযোগ দিয়েছেন,” বলেন আহন।
সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন বোয়েন ইয়াং, কেলি ম্যারি ট্রান, লিলি গ্ল্যাডস্টোন, হান গি-চান, জোয়ান চেন ও ইউন ইউ-জাং। গল্পটি ঘুরে বেড়ায় দুই সমলিঙ্গ দম্পতির জীবন, যেখানে গ্রীন কার্ড পেতে মিন অ্যাঞ্জেলাকে বিয়ে প্রস্তাব দেয়, বদলে অ্যাঞ্জেলার আইভিএফ খরচ বহনের চুক্তি হয়। এরপর ঘটে নানা হাস্যকর কিন্তু আবেগঘন ঘটনা, বিশেষ করে মিনের দাদি হঠাৎ সিয়াটলে চলে আসার পর।
আহন বলেন, “ছবিটির মূল থিম সমলিঙ্গ বিবাহ ও পিতৃত্ব। আমি নিজেও এসব নিয়ে ভাবছিলাম, তাই শুটিংয়ের সময় আবেগ ধরে রাখতে পারিনি। ক্যামেরার পেছনে আমি কান্নায় ভেসেছি বারবার। কিন্তু আমি বুঝেছিলাম, এই ছবিটি হৃদয়ের জায়গা থেকে নির্মাণ করতে হবে।”
মল্টায় উপস্থিতি নিয়ে মজার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন তিনি। শুরুতে তার প্রেমিক বলেছিলেন না যেতে, কারণ তিনি ভেবেছিলেন এটা মালদ্বীপ, যেখানে সমকামিতা নিষিদ্ধ। পরে জানা যায়, মল্টা ইউরোপের অন্যতম এলজিবিটিকিউ-বান্ধব দেশ।
পরবর্তী পরিকল্পনা নিয়ে আহন জানান, তিনি কুইয়ার এশিয়ান গল্প বলতে চান বড় পরিসরে। পাশাপাশি আবারও ড্রামা ঘরানার ছবিতে ফিরতে চান, কারণ কমেডি অনেক কঠিন ও সূক্ষ্ম বিষয়।
তিনি বলেন, “কমেডিতে প্রতিটি শব্দ, সিলেবলের ভূমিকা থাকে। ‘ফায়ার আইল্যান্ড’-এ একটি জোক অনেকবার ট্রায়ালেও কাজ করেনি, পরে শব্দের উচ্চারণে সামান্য পরিবর্তনে মানুষ হাসতে শুরু করল। এতটাই সূক্ষ্ম কাজ এটি। তাই আবার ড্রামা করতে চাই।”
চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য ‘দ্য ওয়েডিং ব্যাংকোয়েট’ শুধু একটি রিমেক নয়, বরং একটি সমকালীন সামাজিক বক্তব্য ও গভীর আত্মঅনুসন্ধানের আখ্যান। বিশ্বব্যাপী প্রদর্শনের মাধ্যমে এটি নতুন করে আলোচনায় এসেছে।