গাজা উপত্যকায় চলমান হামলা ও অবরোধের কারণে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে বলে সতর্ক করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে গাজার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
অ্যামনেস্টির সিনিয়র পরিচালক এরিকা গুয়েভারা রোসাস এক বিবৃতিতে বলেন, “প্রতিটি ঘণ্টা আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ ছাড়া কেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও ফিলিস্তিনির জীবন ঝরে যাচ্ছে। গাজা শহর ধীরে ধীরে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাচ্ছে। ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না যদি আমরা চেয়ে দেখি শিশুরা অনাহারে মারা যাচ্ছে, অথচ খাদ্যসামগ্রী কয়েক মাইল দূরে অবরুদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে।”
তিনি আরও বলেন, “গাজায় এই দুর্ভিক্ষ ইসরায়েলের পরিকল্পিত নীতি ও খাদ্য অবরোধের সরাসরি ফলাফল। মানবিক সহায়তা বাধাগ্রস্ত করা, জীবনধারণের জন্য জরুরি অবকাঠামো ধ্বংস এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সরাসরি হামলা—এসবই গণহত্যার প্রমাণ।”
নিহতের সংখ্যা বাড়ছে
চিকিৎসা সূত্রের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, শুক্রবার একদিনেই ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৭ জন গাজা শহরে মারা যান, যেখানে বড় ধরনের সামরিক অভিযানের আগে হামলা তীব্রতর করা হয়েছে।
এর আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সতর্ক করেন, হামাস যদি যুদ্ধবিরতির শর্ত না মানে তবে গাজা শহর সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেন, “হামাসের হত্যাকারী ও ধর্ষকদের মাথার ওপর শিগগিরই নরকের দরজা খুলে যাবে, যদি না তারা ইসরায়েলের শর্ত মেনে নেয়।”
যুদ্ধবিরতির শর্ত ও হামাসের অবস্থান
ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির জন্য যে শর্ত দিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে সব বন্দিকে মুক্তি দেওয়া এবং হামাসের সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ। অন্যদিকে হামাস জানিয়েছে, তারা বন্দি মুক্তি দিতে রাজি, তবে সেটি যুদ্ধ বন্ধের বিনিময়ে। ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া নিরস্ত্রীকরণের দাবি মানা হবে না বলে সংগঠনটি স্পষ্ট জানিয়েছে।
গাজায় চলমান সংঘাত দীর্ঘায়িত হওয়ায় আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, যুদ্ধ ও অবরোধের কারণে খাদ্য, ওষুধ ও আশ্রয় সংকটে গাজায় হাজারো মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে।