দেশজুড়ে বিনিয়োগ, ব্যবসা এবং ব্যক্তিগত ও পারিবারিক নানা সিদ্ধান্ত নির্বাচনের অপেক্ষায় স্থবির হয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, “মানুষ এখন নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চায়। বিনিয়োগ হোক অথবা পারিবারিক সিদ্ধান্ত, সবাই বলছে আগে নির্বাচন হোক তারপর সিদ্ধান্ত নেব। সবকিছুই স্থগিত।”
রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ডিআরইউতে ‘ভিশনারি রেকমেন্ডেশন্স ফর বিল্ডিং অ্যান অ্যাডভান্সড নেশন অব দ্য ফিউচার’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বইটির লেখক ও প্রকাশক যুক্তরাজ্যের সাবেক সরকারি ও স্থানীয় সরকার কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দিন এমবিই।
নির্বাচন বিলম্বের প্রসঙ্গে আমীর খসরু অভিযোগ করেন, জনমতের আকাঙ্ক্ষা সত্ত্বেও একটি গোষ্ঠী ভোটে দেরি ঘটানোর চেষ্টা করছে। তার ভাষায়, যারা নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চায় তারা গণতন্ত্রের পক্ষে নেই।
প্রস্তাবিত গণভোট ইস্যুতে তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিদ্যমান সংবিধানের অধীনে শপথ নিয়েছে। এই সংবিধানে নির্বাচনের আগে বা নির্বাচনের দিন গণভোটের বিধান নেই। তারপরও রাজনৈতিক সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার জায়গা থেকে বিএনপি নির্বাচনদিন গণভোট বিবেচনায় আগ্রহ দেখিয়েছিল, যাতে পরিস্থিতি অস্থির না হয় এবং সৌহার্দ্য বজায় থাকে।
সংস্কার এজেন্ডা প্রসঙ্গে আমীর খসরু জানান, প্রশাসন, পুলিশ ও শাসনব্যবস্থাসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতে ব্যাপক সংস্কারের প্রাথমিক কাজ বিএনপি অনেকটাই এগিয়ে রেখেছে। “বাংলাদেশে সরকার গঠনের পর সিদ্ধান্ত নিতে মাসের পর মাস লেগে যায়। এবার আমরা আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছি, যাতে মানুষের ম্যান্ডেট পেলে প্রথম দিন থেকেই বাস্তবায়ন শুরু করা যায়।”
তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের দুর্ব্যবস্থার পর জনআকাঙ্ক্ষা এখন খুব বেশি, ধৈর্য কমে এসেছে। তাই শুরু থেকেই ফল দেখাতে প্রস্তুতি জরুরি।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রস্তাব নিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি আট বছর আগে ভিশন ২০৩০ তে দ্বিকক্ষ সংসদের প্রস্তাব দিয়েছিল এবং পরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা সংস্কার পরিকল্পনায় তা পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। “এখন অনেকে যেন নতুন করে বিষয়টি আবিষ্কার করেছেন, কিন্তু প্রস্তাবটি প্রথম দিয়েছিল বিএনপিই।”
কনসেনসাসের নামে অন্যদের মত চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রকৃত গণতন্ত্র মানে ভিন্নমতকে সম্মান জানানো এবং জনগণের ম্যান্ডেটের মাধ্যমে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো, ঢাকার একটি ছোট গোষ্ঠীর সিদ্ধান্ত নয়।
