আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা শহীদদের স্মরণ এবং গণতান্ত্রিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরে “শ্রাবণ বিদ্রোহ: জুলাই আন্দোলন” শীর্ষক চলচ্চিত্র প্রদর্শন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তাঁরা।
অনুষ্ঠানে শহীদ আবু সাইয়েদের বাবা মকবুল হোসেন এবং শহীদ তাহির জামান প্রিয়’র মা শামসি আরা জামান তাঁদের সন্তানদের মৃত্যুর বিচার দাবি করেন।
তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, “বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ এই ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয় অর্জন করেছে। শহীদদের স্মরণে এ ধরনের প্রদর্শনী আমাদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়।”
তিনি জানান, চলচ্চিত্রসহ বিভিন্ন মাধ্যমে শহীদদের স্মরণ করা এবং তাঁদের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো আমাদের নাগরিক দায়িত্ব।
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল চলমান বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলেন, “জুলাই আন্দোলনের বিচার সম্পূর্ণ হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ বিচারকে ঘিরে বিভ্রান্তি তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক মহল এবং জনগণকে ভুল পথে নেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “নির্বাচনের আগেই সুবিচার নিশ্চিত করা হবে।”
সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “আমরা ১৬ বছর শোষণ ও লুটপাটের শিকার হয়েছি। এখন ঐক্যবদ্ধ থাকলে নতুন এক বাংলাদেশের পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে রাজনৈতিক দমন-পীড়নের শুরু হয়েছিল সাংস্কৃতিক দমন থেকে। আমাদের এমনভাবে গড়ে তোলা হয়েছে যেন লুঙ্গি পরা লজ্জার বিষয়, অথচ অন্য সংস্কৃতির মানুষ নিজের ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করে।”
ভাষার ভিন্নতা ও আঞ্চলিকতার ক্ষেত্রেও মানুষের মধ্যে হীনমন্যতা তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। “নিজের ভাষা, পোশাক, সংস্কৃতি নিয়ে লজ্জিত করার এই প্রক্রিয়া থেকেই আত্মপরিচয়ের সংকট তৈরি হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত উপদেষ্টারা বলেন, শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে না। ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং কাঠামোগত সংস্কার সম্ভব হবে।