বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল ও কার্যকর করতে প্রায় ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকার নীতিনির্ভর ঋণ অনুমোদন দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বৃহস্পতিবার ম্যানিলাভিত্তিক এই আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
‘স্ট্যাবিলাইজিং অ্যান্ড রিফরমিং দ্য ব্যাংকিং সেক্টর প্রোগ্রাম–সাবপ্রোগ্রাম ওয়ান’ নামের কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের নীতিগত সংস্কার বাস্তবায়নে এ সহায়তা দেওয়া হবে।
এডিবি জানায়, ব্যাংক খাতে নীতিগত দুর্বলতা, তারল্য ঘাটতি এবং পরিচালনায় স্বচ্ছতার অভাব ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগের অংশ হিসেবেই এ ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এই কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপনা কাঠামো শক্তিশালী করা হবে, ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের জবাবদিহি বাড়ানো হবে এবং খেলাপি ঋণ হ্রাসে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এডিবির আর্থিক খাত বিশেষজ্ঞ সঞ্জীব কৌশিক বলেন, “সম্পদের গুণগত মানের দুর্বলতা এবং সীমিত আর্থিক অন্তর্বাহই বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের প্রধান সমস্যা। আমাদের এই কর্মসূচি আন্তর্জাতিক মানের তদারকি ও জবাবদিহি নিশ্চিত করবে এবং বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থপ্রবাহ সহজ করবে।”
তিনি আরও বলেন, “আজও অনেক মানুষ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা মূলধারার ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে রয়েছেন। এই উদ্যোগ ব্যাংক খাতের মূলধন জোরদার করবে এবং আরও বিস্তৃত অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির সুযোগ তৈরি করবে।”
বর্তমানে দেশের একটি বড় জনগোষ্ঠী মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল। এডিবি আশা করছে, ডিজিটাল অবকাঠামোসহ সার্বিক ব্যাংকিং খাতের এই সংস্কার দীর্ঘমেয়াদে জনগণের জন্য সুলভ সুদে অর্থপ্রাপ্তি নিশ্চিত করবে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির ভিত মজবুত করবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এডিবির সদস্য সংখ্যা ৬৯টি, যার মধ্যে ৫০টি দেশ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত। সংস্থাটি টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
