যশোর, ২৬ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : যশোরের অভয়নগরের ডহর মশিয়াহাটি গ্রামে কৃষকদল নেতা তরিকুল ইসলাম সরদারকে হত্যার পর তার বাড়ি সহ একাধিক ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ২২ মে রাতে এই ভয়াবহ হামলার পর পুরো এলাকা স্তব্ধ হয়ে যায়। এখন ওই গ্রামের পুড়ে যাওয়া বাড়িগুলোর ধ্বংসস্তূপে চলছে আহাজারি ও বেঁচে থাকার সংগ্রাম।
২৫ মে শনিবার যশোরের জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার রণক জাহান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলেন এবং পুনর্বাসনের আশ্বাস দেন। প্রশাসনের উপস্থিতিতে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ভুক্তভোগীদের একজন বলেন, “২২ তারিখ রাতে বৃষ্টির সময় আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এরপর থেকে বিদ্যুৎ নেই। মাথার উপর ছাউনি নেই, ঘরে খাবার নেই। পোশাকও পুড়ে গেছে।”
জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম জানান, “এই হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী সহিংসতার বিষয়টি আমরা খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব সময় প্রস্তুত আছে। কারও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।”
প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে প্রতিটি পরিবারে দুই বান্ডিল টিন, ৩০ কেজি চাল, একটি করে কম্বল ও ৬ হাজার টাকা করে ঘর মেরামতের জন্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
তিনি আরও বলেন, “যতদিন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো স্থায়ীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে না পারছে, ততদিন পর্যন্ত আমাদের পুনর্বাসন কার্যক্রম চলমান থাকবে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় তা দ্রুত পুনঃসংযোগের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
এসময় পুলিশ সুপার রণক জাহান জানান, “ঘটনার দিনটি ছিল একটি অপ্রস্তুত সময়। তবে এখন আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সদা প্রস্তুত রয়েছে।”
ঘটনাস্থলে গবাদি পশু ও অন্যান্য মালামাল লুট হয়ে গেছে বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। গৃহপালিত গরুগুলো কোথায় গেছে সে নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
এই ঘটনার পর পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, দোষীদের শনাক্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে সরকার সব সময় থাকবে।