Tuesday, July 8, 2025
Homeআন্তর্জাতিকমহারাষ্ট্রকে জঙ্গিদের সঙ্গে তুলনা, বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন আদিত্য ঠাকরে

মহারাষ্ট্রকে জঙ্গিদের সঙ্গে তুলনা, বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন আদিত্য ঠাকরে

ভাষা বিতর্ক ঘিরে উত্তাল মহারাষ্ট্র; মারাঠিদের অপমানের অভিযোগে বিজেপিকে একহাত নিলেন শিবসেনা (UBT) নেতা

মহারাষ্ট্রে ভাষা ঘিরে ক্রমেই তীব্র হচ্ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। রবিবার শিবসেনা (UBT)-র নেতা আদিত্য ঠাকরে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানান। তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি মহারাষ্ট্রের প্রতি একধরনের বিদ্বেষ ও ‘বিষ’ পুষে রেখেছে।

এই মন্তব্য আসে এমন সময়, যখন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী আশীষ শেলার মুম্বাইয়ে মারাঠি ভাষা নিয়ে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার তুলনা করেন জম্মু–কাশ্মীরের পাহেলগামে হওয়া জঙ্গি হামলার সঙ্গে। এই তুলনা ঘিরে শুরু হয় জোর বিতর্ক।

আদিত্য ঠাকরে বলেন, “বিজেপি আজ মহারাষ্ট্রকে পাহেলগামের জঙ্গিদের সঙ্গে তুলনা করছে। এই জঙ্গিদের আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি। কেউ জানে না তারা পাকিস্তানে পালিয়ে গেছে নাকি বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। কিন্তু মহারাষ্ট্রকে এইভাবে তুলনা করা স্পষ্ট করে দেয়, বিজেপির মনোজগতে কতটা ঘৃণা ও বিষ জমে আছে রাজ্যটির প্রতি।”

এদিকে, আশীষ শেলার বলেন, “পাহেলগামে ধর্ম জিজ্ঞেস করে গুলি করা হয়েছিল। আর এখানে নিরীহ হিন্দুদের মারধর করা হচ্ছে শুধু ভাষার কারণে। এই ঘটনাগুলো মনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।”

সম্প্রতি মুম্বাইয়ের ওরলিতে এক ব্যবসায়ীর অফিসে হামলার ঘটনায় মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার (এমএনএস) পাঁচ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির নবগঠিত ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS), ২০২৩ অনুযায়ী একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।

ভাষা বিতর্কে আলোচনায় আসেন ওই ব্যবসায়ী সুশীল কেডিয়া, যিনি রাজ ঠাকরের দল ও নেতাকে নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছিলেন। পরে তিনি বলেন, মন্তব্যগুলো আবেগপ্রবণ অবস্থায় করেছিলেন এবং এখন ভুল বুঝতে পেরেছেন।

মীরা-ভায়ান্দার এলাকায় এক দোকানদারকে মারাঠি ভাষায় কথা না বলায় মারধরের একটি ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা একটি আঞ্চলিক দলের সঙ্গে যুক্ত।

শুক্রবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস স্পষ্ট করে বলেন, মারাঠি ভাষার নামে কেউ যদি দাঙ্গাবাজি করে, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তবে এই বিতর্কের মধ্যেই প্রায় দুই দশক পর একসঙ্গে মঞ্চে দেখা যায় ঠাকরে পরিবারের দুই অংশকে। রাজ ঠাকরে ও উদ্ধব ঠাকরে শনিবার মুম্বাইয়ের ওরলি ডোমে একটি যৌথ সমাবেশে অংশ নেন। তাঁরা “হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া”র বিরোধিতা করে একত্র হন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মহারাষ্ট্র সরকার ১ থেকে ৫ শ্রেণিতে ইংরেজি ও মারাঠি মাধ্যমের স্কুলে হিন্দিকে বাধ্যতামূলক তৃতীয় ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা ১৬ এপ্রিল প্রত্যাহার করা হয়। তবে এই সিদ্ধান্তই ঠাকরে পরিবারকে আবারও কাছাকাছি এনেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

এই মুহূর্তে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি ভাষা, পরিচয় ও ক্ষমতার জটিল সমীকরণে প্রবেশ করেছে। যার প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের ওপরও।

  • বিষয়াদি সম্পর্কে আরও পড়ুন:
  • ভারত

RELATED NEWS

Latest News