মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ভারত ও রাশিয়াকে তিনি হারিয়েছেন চীনের কাছে। শুক্রবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ একটি পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, “মনে হচ্ছে আমি আমার মিত্র ভারত ও রাশিয়াকে গভীরতম ও অন্ধকারতম চীনের কাছে হারিয়েছি। তারা যেন দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ লাভ করে।” এর সঙ্গে তিনি একটি ছবি যুক্ত করেন, যেখানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একসঙ্গে দেখা যায়।
তারা গত সপ্তাহে চীনের তিয়ানজিন শহরে অনুষ্ঠিত শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেন। এই সংস্থাটিকে অনেকেই পশ্চিমা প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চীন নেতৃত্বাধীন ভূরাজনৈতিক উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন।
এই বছরের সম্মেলন বিশেষ মনোযোগ কেড়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতি ঘিরে। মিত্র ও প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের ফলে চীন সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারতসহ গুরুত্বপূর্ণ পশ্চিমা মিত্রদের কাছে টেনে নিচ্ছে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।
যদিও ভ্লাদিমির পুতিন নিয়মিতভাবেই এসব সম্মেলনে অংশ নেন, নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতি পশ্চিমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। দীর্ঘদিন ধরে ভারত চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী ও পশ্চিমাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও এ ধরনের চীন নেতৃত্বাধীন উদ্যোগ থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিল।
গত আগস্টের শেষ দিকে সাত বছর পর প্রথমবারের মতো চীন সফরে যান মোদি। এর আগে ভারত সরকার ট্রাম্প প্রশাসনকে ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য বোঝাতে ব্যর্থ হয়। এ পদক্ষেপই ভারতকে নতুন করে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতায় নিয়ে এসেছে বলে মনে করছেন অনেকে।
ট্রাম্প শুরুতে ২৫ শতাংশ প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করেছিলেন, পরে আরও ২৫ শতাংশ যোগ করেন। এর লক্ষ্য ছিল ভারতকে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধে চাপ দেওয়া। তবে দিল্লি বারবার জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার জ্বালানি আমদানি বন্ধ করবে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, রাশিয়া ও চীনের সম্পর্ককে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে এনেছে।