Friday, September 5, 2025
Homeজাতীয়ঢাবি ডাকসু নির্বাচন ঘিরে দুই প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা

ঢাবি ডাকসু নির্বাচন ঘিরে দুই প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা

উচ্চ আদালতে রিট খারিজ, সাইবার আচরণে কঠোর অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ও হল ইউনিয়ন নির্বাচনকে ঘিরে চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। বৃহস্পতিবার আলাদা সংবাদ সম্মেলনে দুই শিক্ষার্থী প্যানেল ইশতেহার ঘোষণা করেছে। একই দিনে হাইকোর্ট একটি রিট আবেদন খারিজ করে দেয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাইবার আচরণে কঠোর নির্দেশনা জারি করে।

ছাত্র অধিকার পরিষদ “পরিবর্তনের ডাকসু, পরিবর্তনের ভোট” স্লোগানে ১৪ দফা ইশতেহার প্রকাশ করে। তাদের অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে— মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই আন্দোলনের চেতনা রক্ষা, নিয়মিত ডাকসু নির্বাচন আয়োজন এবং ক্যাম্পাসে অপসংস্কৃতির রাজনীতির অবসান। ইশতেহারে আরও বলা হয়েছে নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসনের নিশ্চয়তা, ভর্তুকিযুক্ত খাবারের ব্যবস্থা, আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা কেন্দ্র ও আধুনিক গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা, ফ্রি ওয়াই-ফাই, একাডেমিক সেবা সহজীকরণ, আংশিক চাকরি ও বৃত্তি প্রদান, পরিবহন সংস্কার, চিকিৎসা সুবিধা উন্নয়ন, নিরাপত্তা জোরদার এবং নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা।

প্যানেলের ভিপি প্রার্থী বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের প্রকৃত অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। দখল ও আধিপত্যের রাজনীতি ঢাবিতে ফিরতে দেব না।”

অন্যদিকে, ইন্টিগ্রেটেড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন “ডিইউ ফার্স্ট” স্লোগানে ২৭ দফা ইশতেহার ঘোষণা করে। তাদের প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে— ‘এক শিক্ষার্থী এক ল্যাপটপ’ কর্মসূচি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স, বায়োটেকনোলজি ও সাইবার নিরাপত্তায় গবেষণা কেন্দ্র, আধুনিক পাঠ্যক্রমে এআই ও ডেটা সায়েন্স অন্তর্ভুক্তকরণ, ভাষা পরীক্ষার প্রস্তুতি কেন্দ্র, র‌্যাগিং ও অতিথিকক্ষ প্রথা বন্ধ, পরিবহনে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি, মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা, মাদকবিরোধী উদ্যোগ, সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের গবেষণা তহবিল ও সাংস্কৃতিক সহায়তা, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী কেন্দ্র, বার্ষিক ডাকসু নির্বাচন এবং বাজেট অনলাইনে প্রকাশের প্রতিশ্রুতি।

ভিপি প্রার্থী জামালউদ্দিন খালিদ বলেন, “আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের সেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দেখতে চাই। এজন্য আধুনিকায়ন, গবেষণা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জরুরি।”

এদিকে, বিতর্কিত ভিপি প্রার্থী জুলিয়াস সিজারের রিট আবেদন বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় আইনজীবী শিশির মণি জানান, এ বিষয়ে আপিল বিভাগের রায় থাকায় নতুন করে রিট গ্রহণযোগ্য নয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাইবার হয়রানি, মানহানি ও প্রচারণার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, নির্বাচনের সময় একটি সাইবার টাস্কফোর্স কাজ করবে। নিয়ম ভাঙলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রশাসন স্পষ্ট করেছে, ভোটের দিন ৯ সেপ্টেম্বর ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। প্রচারণা চলবে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ভোট গ্রহণ হবে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এবং সেদিনই ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

দুই প্যানেলের ইশতেহার, আদালতের সিদ্ধান্ত ও প্রশাসনের নির্দেশনার পর এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বহুল প্রতীক্ষিত ডাকসু ও হল ইউনিয়ন নির্বাচনকে ঘিরে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

RELATED NEWS

Latest News