ইরাকে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গি গোষ্ঠীর হাতে নিহত হাজারো মানুষের দেহাবশেষ উদ্ধারের কাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় মসুল শহরের কাছে একটি গণকবর খনন কার্যক্রম চালাচ্ছে তারা।
রবিবার (১৭ আগস্ট) খনন প্রকল্পের পরিচালক আহমেদ আল-আসাদি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, প্রথম ধাপে খাসফা এলাকায় পৃষ্ঠতল খননের কাজ চলছে। ১০ আগস্ট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই অভিযান শুরু হয়।
এএফপির এক সংবাদদাতা জানান, খনন কার্যক্রমে কাজ করা দল ইতোমধ্যে বালুর নিচ থেকে মানব খুলি খুঁজে পেয়েছে।
খাসফা এলাকা মসুলের কাছে অবস্থিত। এ শহরকেই আইএস ২০১৪ সালে তাদের ঘোষিত “খিলাফতের রাজধানী” হিসেবে ব্যবহার করেছিল। কয়েক বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শেষে ২০১৭ সালে ইরাকে আইএস পরাজিত হয়।
গণকবরটির সঠিক পরিসর এখনও জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, আইএসের দখলদারিত্ব চলাকালে বহু মানুষকে হত্যা করে এখানে কবর দেওয়া হয়েছিল। খননকাজ চলার সঙ্গে সঙ্গে নিহতদের সংখ্যা ও পরিচয় সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এসব গণকবর আইএসের নৃশংসতা ও যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ বহন করছে। নিহতদের মধ্যে অনেক বেসামরিক মানুষ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইরাকি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খনন শেষ হলে দেহাবশেষ সংগ্রহ করে তা শনাক্ত করার কাজ শুরু হবে। নিহতদের পরিবারগুলোর কাছে মরদেহ হস্তান্তরের জন্য ডিএনএ পরীক্ষাও চালানো হতে পারে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিক সহায়তা ও পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানিয়েছে, যাতে গণকবর খনন ও মৃতদের শনাক্তকরণ কার্যক্রম স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়।
এই গণকবর উন্মোচন কার্যক্রম আবারও বিশ্বকে মনে করিয়ে দিচ্ছে, আইএস দখলদারিত্বের সময় ইরাক কী ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছিল।